যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারত-মার্কিন সম্পর্ককে ‘খুবই বিশেষ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, দুই দেশের মধ্যে কোনো গুরুতর উদ্বেগ নেই এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার সম্পর্ক সবসময় বন্ধুত্বপূর্ণ থাকবে। তবে মোদির কিছু সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে তিনি নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। খবর এনডিটিভি।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, “আমি সবসময় ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখব। আমি সবসময় মোদির বন্ধু থাকব। তিনি একজন মহান প্রধানমন্ত্রী। তবে বর্তমানে তিনি যা করছেন, তা আমার পছন্দ হচ্ছে না। তবুও ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক অত্যন্ত বিশেষ। উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই, মাঝে মাঝে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়।”
ভারতসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনার অগ্রগতি প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, আলোচনা ইতিবাচকভাবে এগোচ্ছে। তবে ইউরোপীয় কমিশনের গুগলের বিরুদ্ধে নেওয়া ৩.৫ বিলিয়ন ডলারের জরিমানা নিয়ে ট্রাম্প অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “আলোচনা ভালো চলছে। আমরা সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখছি। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়ন শুধু গুগলের নয়, আমাদের সব বড় কোম্পানির সঙ্গেও বৈষম্যমূলক আচরণ করছে।”
এর আগে ট্রাম্প সোশ্যালে দাবি করেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র ‘ভারত ও রাশিয়াকে চীনের কাছে হারিয়েছে’। তবে এএনআই-এর প্রশ্নে তিনি এ মন্তব্য থেকে সরে এসে বলেন, “আমি মনে করি না আমরা তাদের হারিয়েছি। তবে ভারত রাশিয়া থেকে এত বেশি তেল কিনছে, তা দেখে আমি হতাশ। আমি তাদের এ বিষয়ে অবহিত করেছি।”
ট্রাম্প আরও বলেন, “আমরা ভারতের ওপর একটি বড় শুল্ক আরোপ করেছি—৫০ শতাংশ, যা খুবই উচ্চ। তবুও আমি মোদির সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রেখেছি। কয়েক মাস আগে তিনি এখানে এসেছিলেন, আমরা রোজ গার্ডেনে গিয়েছিলাম এবং সংবাদ সম্মেলনও করেছি।”
এদিকে, ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সম্পর্ক আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মধ্যে বিস্তৃত বৈশ্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্ব রয়েছে, যা অভিন্ন স্বার্থ, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং জনগণের বন্ধনের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।”
জয়সওয়াল আরও যোগ করেন, “এই অংশীদারিত্ব ইতিমধ্যেই বহু সংকট ও চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করেছে। আমরা দুই দেশের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অগ্রাধিকারমূলক এজেন্ডায় মনোযোগী রয়েছি এবং আশা করি সম্পর্ক পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও অভিন্ন স্বার্থের ভিত্তিতে আরও শক্তিশালী হবে।” তিনি নিশ্চিত করেন, ভারত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সংক্রান্ত আলোচনাও অব্যাহত রেখেছে।