কক্সবাজারের নাফ নদী ও সংলগ্ন এলাকায় একের পর এক বাংলাদেশি জেলের নিখোঁজ বা অপহরণের ঘটনায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। স্থানীয় নৌকা মালিক ও মাছ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি বাংলাদেশি জেলেদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে।
নাফ নদী বাংলাদেশের টেকনাফ উপজেলা ও মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থিত। নদী ও এর মোহনা এবং সেন্ট মর্টিন দ্বীপের দক্ষিণ সাগরে মাছ ধরা বাংলাদেশের জেলেদের প্রধান জীবিকা। তবে এই এলাকায় আরাকান আর্মির হঠাৎ সক্রিয়তার কারণে অনেক জেলে সাগরে মাছ ধরতে ভয় পাচ্ছেন।
স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে আরাকান আর্মির দখলদারিত্ব বৃদ্ধি পায় এবং জেলেদের অপহরণের ঘটনা বাড়ে। কেউ কেউ মিয়ানমারের জলসীমায় ঢুকে পড়ায় বা সীমান্ত অতিক্রমের কারণে আটক হচ্ছেন। বেশিরভাগ ঘটনা ঘটে অসাবধানতা বা বেশি মাছ ধরার কারণে।
রশিদ আহমেদের মতো অনেক জেলের স্বজন জানিয়েছেন, তাদের পরিবারের সদস্যদের হাত-পা বেঁধে মিয়ানমারের জলসীমায় নেয়া হয়েছে। কিছুদিন পর আর্মির ওয়েবসাইটে আটক জেলেদের ছবি প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে তাদের শনাক্ত করেছেন স্বজনেরা।
কোস্টগার্ড জানায়, বাংলাদেশের জলসীমার ভিতরে কেউ আটক হচ্ছে না। তবে নিরাপত্তা বৃদ্ধি, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় সতর্কতা ও টহল কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। সম্প্রতি ২৯ আগস্ট নাফ নদীর মোহনা ও সংলগ্ন এলাকায় ১১২ জন জেলেকে আটক করা হয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও নিরাপত্তা সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, আরাকান আর্মির হঠাৎ কড়া অবস্থান নেওয়ার পেছনে কয়েকটি কারণ থাকতে পারে:
১. মিয়ানমারের সামরিক সরকার বিদ্রোহীদের দখল পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা।
২. জেলেদের আটক করে মাছ, জাল ও সরঞ্জাম দখল করা।
৩. বাংলাদেশের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ ও বৈধ কর্তৃপক্ষ হিসেবে স্বীকৃতি অর্জনের চেষ্টা।
যদিও বাংলাদেশের কোস্টগার্ড নিয়মিত টহল চালাচ্ছে, বাস্তবে বাংলাদেশি জেলেদের জন্য নিরাপত্তা এখন প্রশ্নবিদ্ধ। একশত জেলে নিখোঁজের পরও তাদের খোঁজ বা ফেরত আনা কঠিন হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপ এখনও স্পষ্ট নয়।