গত এক মাসে নতুন করে প্রায় ৭৫০ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে এবং তারা বিভিন্ন এফডিএমএন শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। সেনাসদর সূত্রে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেস ‘এ’-তে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মিলিটারি অপারেশনস ডিরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গত এক মাসে ৯ লাখ ১২ হাজার পিস ইয়াবা, ১ কেজি ক্রিস্টাল আইস, এবং ১৭ লাখ টাকার সমমূল্যের সিগারেট, পোশাক, খাবার ও কসমেটিকসসহ অন্যান্য সামগ্রী জব্দ করেছে। এছাড়া অভিযান চালিয়ে ৬৫টি অবৈধ অস্ত্র, ৫২৯ রাউন্ড গোলাবারুদ ও বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
গত বছরের আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ১২ হাজার ১১৯টি হারানো অস্ত্রের মধ্যে ৯ হাজার ৭৯৪টি এবং ৩ লাখ ৯০ হাজার রাউন্ড হারানো গোলাবারুদ থেকে ২ লাখ ৮৭ হাজার ৩৫৯ রাউন্ড উদ্ধার করা হয়েছে। বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ১৭ হাজার ৯২৬ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে গত এক মাসে ১ হাজার ২৯৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কিশোর গ্যাং, তালিকাভুক্ত অপরাধী, ডাকাত ও চাঁদাবাজ উল্লেখযোগ্য।
ব্রিফিংয়ে মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, গত আগস্টে বিজয়নগরে গণঅধিকার পরিষদ ও জাতীয় পার্টি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় পুলিশের তৎপরতা না থাকায় সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করেছে। সংঘর্ষের সময় বিশৃঙ্খলাকারীরা অগ্নিসংযোগ ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের মধ্যে আহত হয় ১১ জন।
মাদকবিরোধী অভিযানের বিষয়ে তিনি জানান, খিলগাঁও, কাফরুল, কলাবাগান, নাখালপাড়া, যশোর, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর, হবিগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গত এক মাসে ৩৭৮ জন মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চলতি আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ৫ হাজার ৯৫৪ জন মাদকের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
চোরাচালান প্রতিরোধে ৩, ৬ ও ২৭ আগস্ট সিলেট ও সুনামগঞ্জে অভিযান চালিয়ে ২ কোটি ১৯ লাখ টাকার পণ্য জব্দ করা হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে ৮টি গোয়েন্দা তথ্যভিত্তিক অভিযান চালিয়ে ১৮টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৬১ রাউন্ড অ্যামোনিশন ও মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযানে ৩৭ জন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার মধ্যে ১৭ জন জেএসএস (মূল), ২ জন ইউপিডিএফ (মূল), ১ জন এমএলপি, ৪ জন মাদক ব্যবসায়ী, ২ জন মানবপাচারকারী এবং ১১ জন বিভিন্ন অপরাধে জড়িত।
করনেল মো. শফিকুল ইসলাম জানান, ১৫ আগস্ট খাগড়াছড়ির শান্তিনগর এলাকায় এমএলপির বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ৮টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৪৪ রাউন্ড অ্যামোনিশন ও অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া ২৫ জুলাই থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত বান্দরবানের রুমা উপজেলায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে কেএনএর সুরক্ষিত প্রশিক্ষণ ঘাটি ধ্বংস করা হয়েছে এবং ব্যবহৃত সামরিক সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে।