নেপালে ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ এবং সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভে ভয়াবহ সহিংসতা দেখা দিয়েছে। সোমবার সকালে দেশটির হাজার হাজার ছাত্র-জনতার এই বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ১৬ জন। এছাড়া আরও শত শত বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি নেতৃত্বাধীন সরকার ফেসবুক, ইউটিউব ও এক্সসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম বন্ধের ঘোষণা দেয়। এর প্রতিবাদে রাজধানী কাঠমান্ডুতে শুরু হওয়া বিক্ষোভ এখন দেশের অন্যান্য এলাকায়ও ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানী কাঠমান্ডুর বিভিন্ন এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে এবং সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ বিক্ষোভ দমনে রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস এবং জলকামান ব্যবহার করেছে। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক তরুণ জানায়, কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী ভেতর থেকে আন্দোলনে উসকানি দিচ্ছে। তিনি বলেন, “আজ আমরা ইতোমধ্যে জয়ী হয়েছি।”
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং দুর্নীতি দমনসহ অন্যান্য দাবিতে আন্দোলনরত বিক্ষোভকারীদের ওপর আইনশৃঙ্খলাবাহিনী চড়াও হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট ও জলকামান ব্যবহার করেছে, যার ফলে বহু মানুষ আহত হয়েছেন।
কাঠমান্ডু পোস্ট জানিয়েছে, সোমবার সকাল থেকে বানেশ্বরে বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশি গুলিতে অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। নেপালের ন্যাশনাল ট্রমা সেন্টারের চিকিৎসক ডা. দীপেন্দ্র পাণ্ডে জানান, হাসপাতালে সাতজন মৃত অবস্থায় পৌঁছেছেন। আরও ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক, এবং ২০ জনেরও বেশি চিকিৎসাধীন।
এভারেস্ট হাসপাতাল অনুযায়ী, সেখানে অন্তত পাঁচজন মারা গেছেন এবং ৫০ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন, তাদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর। এছাড়া কাঠমান্ডু সিভিল হাসপাতাল, কেএমসি হাসপাতাল ও ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় টিচিং হাসপাতালে আহত আরও কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত করা যায়নি।