ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধে চলমান কূটনৈতিক প্রচেষ্টা সাম্প্রতিক হামলার কারণে সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হলেও, কাতারের কূটনীতি থেমে যাবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুলরাহমান বিন জসিম আল থানি।
মঙ্গলবারের ওই হামলার কয়েক ঘণ্টা পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, “গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য যে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল, আজকের হামলায় তাতে কিছুটা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। তবে কাতারের কূটনীতি ইসরায়েলের মতো রাষ্ট্রের আচরণের ওপর নির্ভরশীল নয়। এটি আমাদের জাতীয় পরিচয়ের অংশ। আজকের এই হামলা কোনোভাবেই আমাদের প্রচেষ্টা প্রতিহত করতে পারবে না।”
জানা গেছে, গাজায় যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত খসড়া পরিকল্পনা নিয়ে মঙ্গলবার দোহার একটি আবাসিক ভবনে বৈঠকে বসেছিলেন হামাসের শীর্ষ নেতা ও মুখপাত্র খলিল আল হায়া এবং সংগঠনটির হাইকমান্ডের অন্যান্য সদস্যরা। বৈঠকের মাঝেই ভবনটিতে ইসরায়েলি বিমান হামলা চালানো হয়। এতে অন্তত ছয়জন নিহত হন। তবে হামাস জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে তাদের উচ্চপর্যায়ের কোনো নেতা ছিলেন না।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ হামলাকে “কাপুরুষোচিত” বলে অভিহিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুলরাহমান সাংবাদিকদের বলেন, “যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চলছিল একটি মধ্যস্থতাকারী দেশে। এমন অবস্থায় হঠাৎ করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা আন্তর্জাতিক আইন ও নৈতিক মানদণ্ডের স্পষ্ট লঙ্ঘন। কোন নৈতিক অবস্থান থেকে এমন হামলা গ্রহণযোগ্য হতে পারে?”
তিনি আরও বলেন, “আমরা ভয় পাই না। বহু বছর ধরে কাতার মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা ও শান্তির জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতেও সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।”
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে ২০১৭ সাল থেকে হামাস নেতৃত্বের শীর্ষ পর্যায়ের সদস্যরা কাতারে বসবাস করছেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামাস–ইসরায়েল যুদ্ধের মধ্যস্থতায় কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও মিসর প্রধান ভূমিকা পালন করছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান, হামলাটি ছিল ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর একক সিদ্ধান্ত, এতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।