বিজয় ও সাফল্য আল্লাহর দান। তিনি যাকে ইচ্ছা বিজয় প্রদান করেন এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা তা কেড়ে নেন। পৃথিবীর স্বাভাবিক নিয়মে কেউ স্থায়ীভাবে বিজয়ের আসনে অধিষ্ঠিত থাকে না। কখনো একদল জয়ী হয়, আবার কখনো অন্য দল। এভাবেই ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় জয়-পরাজয় পালাবদল ঘটে।
যারা বিজয়ের পর বিনয়ী হয় এবং আল্লাহকে স্মরণ করে, আল্লাহ তায়ালা তাদের জয়কে মর্যাদাপূর্ণ করেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন— “তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমি তোমাদের স্মরণ করব। আর আমার নেয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো, অকৃতজ্ঞ হয়ো না।” (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫২)
কোরআনে স্পষ্টভাবে বিজয় উদযাপনের পদ্ধতি বর্ণিত হয়েছে। আর তা হলো আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা—তার সামনে সেজদাবনত হওয়া, বিনয়ী হওয়া এবং উদ্ধত আচরণ থেকে বিরত থাকা। মহান আল্লাহ বলেন— “আর রহমানের বান্দারা তারা, যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে। আর মূর্খরা যখন তাদের সম্বোধন করে, তারা বলে ‘সালাম’।” (সুরা আল ফুরকান, আয়াত: ৬৩)
অতএব, প্রকৃত বিজয়ীরা অহংকার ও গর্বে বুক ফুলিয়ে হাঁটে না। তারা স্বৈরাচারী ও অহংকারী মানুষের মতো শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা করে না। বরং তাদের আচরণ হয় মার্জিত, ভদ্র এবং সৎ স্বভাবসম্পন্ন মানুষের মতো।
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাদিসেও বিজয় ও নেয়ামতের সময় শুকরিয়া আদায় করার নির্দেশ এসেছে। কখনো তিনি শুধু সেজদার মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় করেছেন, আবার কখনো দুই রাকাত নামাজ পড়ে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। এটিকে বলা হয় সালাতুশ শোকর বা শুকরিয়ার নামাজ। আর একক সেজদাকে বলা হয় সেজদায়ে শোকর।
হাদিসে বর্ণিত—রাসুল (সা.) বলেন, “যখন তোমরা কোনো নিদর্শন দেখবে তখন সেজদায় পড়ে যাবে।” (আবু দাউদ: ১১৯৯) আবার হজরত আবু বকরা (রা.) থেকে বর্ণিত— “যখন কোনো সুখবর বা আনন্দদায়ক সংবাদ নবীজি (সা.)-এর নিকট আসত, তখন তিনি সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহর দরবারে কৃতজ্ঞতাস্বরূপ সেজদায় পড়ে যেতেন।” (আবু দাউদ: ২৭৭৬)
শুকরিয়ার নামাজের জন্য নির্দিষ্ট রাকাত নেই। তবে কমপক্ষে দুই রাকাত পড়তে হয়। এটি অন্যান্য নফল নামাজের মতোই আদায় করা যায়।