কাতারে হামাস নেতাদের ওপর সম্প্রতি চালানো ইসরায়েলি হামলাকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর মধ্যে ফোনালাপে তীব্র বাকবিতণ্ডা হয়েছে। এ ঘটনায় কাতারও আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গের অভিযোগ তুলে আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, ট্রাম্প ওই হামলার ঘটনায় নেতানিয়াহুর প্রতি প্রবল হতাশা প্রকাশ করেন। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দোহায় হামাসের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে লক্ষ্যবস্তু করা ছিল “অবিবেচনাপ্রসূত পদক্ষেপ”। ট্রাম্প আরও অভিযোগ করেন, মার্কিন সেনাদের কাছ থেকে তিনি এই হামলার খবর পান, অথচ ইসরায়েল আগে থেকে কিছু জানায়নি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হলো এমন এক মিত্র দেশ, যারা গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে মধ্যস্থতার চেষ্টা করছে।
নেতানিয়াহু পাল্টা জবাবে জানান, সুযোগ খুব অল্প সময়ের জন্য তৈরি হয়েছিল, তাই সেটি কাজে লাগানো ছাড়া তার বিকল্প ছিল না। পরে আবারও ট্রাম্প–নেতানিয়াহুর মধ্যে ফোনালাপ হয়, যা তুলনামূলকভাবে শান্তিপূর্ণ ছিল। তখন ট্রাম্প জানতে চান হামলা সফল হয়েছে কিনা, তবে নেতানিয়াহু নিশ্চিত উত্তর দিতে পারেননি। পরবর্তীতে হামাস জানায়, তাদের শীর্ষ নেতারা বেঁচে গেছেন, যদিও সংগঠনের পাঁচ সদস্য ও এক কাতারি নিরাপত্তাকর্মী নিহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ সমর্থক ট্রাম্প ক্রমেই নেতানিয়াহুর ওপর বিরক্ত হয়ে উঠছেন। কারণ, নেতানিয়াহু বারবার যুক্তরাষ্ট্রকে না জানিয়ে একতরফা সামরিক পদক্ষেপ নিচ্ছেন, যা ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা হামাসের শীর্ষ নেতৃত্বকে লক্ষ্য করে “সুনির্দিষ্ট হামলা” চালিয়েছে। অপরদিকে কাতার এ হামলাকে “কাপুরুষোচিত কাজ” ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন হিসেবে নিন্দা জানিয়েছে। কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল–থানি জানান, এই হামলার জবাবে আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়ার প্রস্তুতি চলছে এবং এ বিষয়ে আরব ও মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে।
উল্লেখ্য, গাজায় চলমান ইসরায়েলি অভিযানে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৬০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।