ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত ছাত্রশিবিরের বড় ধরনের সাফল্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতের কংগ্রেস নেতা শশী থারুর। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করেন।
থারুর লিখেছেন, শিবিরের এই জয় হয়তো ভারতের অনেকের কাছে তুচ্ছ ঘটনা মনে হতে পারে, তবে আসন্ন সময়ের জন্য এটি একটি “উদ্বেগজনক ইঙ্গিত।” তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনে কি জামায়াতে ইসলামী সরকার গঠনের পথে এগোবে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের সাফল্যের প্রভাব কি জাতীয় রাজনীতিতেও পড়বে?
তার মতে, বাংলাদেশে দীর্ঘদিনের দুই প্রধান রাজনৈতিক শক্তি আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে। এ কারণে হতাশ অনেক ভোটার জামায়াতের দিকে ঝুঁকছেন। থারুরের দাবি, এটি ধর্মীয় উগ্রতা থেকে নয়; বরং জামায়াতকে এখনো বড় কোনো দুর্নীতি বা অব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত মনে করা হয় না, যেখানে অন্য দুই দল এসব অভিযোগে জর্জরিত।
তিনি সোজাসাপ্টা প্রশ্ন রাখেন: “২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির সাধারণ নির্বাচনে এর ফলাফল কী হবে? নয়াদিল্লিকে কি বাংলাদেশের জামায়াত-নেতৃত্বাধীন সরকার মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত হতে হবে?”
ডাকসু নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির-সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ ছাত্র জোট বড় জয় পেয়েছে। সহ-সভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও সহকারী সাধারণ সম্পাদক (এজিএস)সহ ১৫টি গুরুত্বপূর্ণ আসনের মধ্যে ৯টিতেই তাদের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।
ভিপি পদে শিবির নেতা আবু সাদিক কায়েম ১৪ হাজার ৪২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের আবিদুল ইসলাম খান পান ৫ হাজার ৭০৮ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম হোসেন পান ৩ হাজার ৮৮৩ ভোট এবং ছাত্র ঐক্য প্যানেলের প্রার্থী উমামা ফাতেমা পান ৩ হাজার ৩৮৯ ভোট।
অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রার্থী আব্দুল কাদের পান ১ হাজার ১০৩ ভোট এবং প্রতিরোধ পরিষদের তাসনিম আফরোজ এমি মাত্র ৬৮ ভোটে সন্তুষ্ট থাকতে হয়।
সব মিলিয়ে ডাকসু নির্বাচনে শিবিরের জয় জাতীয় রাজনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।