জনদুর্ভোগ সৃষ্টি এবং উল্টো ৬০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ আদায়ের চেষ্টা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর খুলনার শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার দুদকের প্রকৌশল টিম সড়কের মাটি খুঁড়ে বিভিন্ন উপকরণ পরীক্ষা করেছে। সেখানে সড়ক নির্মাণের বিভিন্ন স্তরে থাকা উপকরণ পাওয়া যায়নি। তবে পরীক্ষার জন্য এসব উপকরণ পাঠানো হয়েছে। অনিয়ম ধরা পড়লে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাহাবুব ব্রাদার্স এবং কেডিএর প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে দুদকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
৩.৭৭৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়ক ৪ লেনে উন্নীত করার জন্য ২০১৩ সালের ৭ মে একনেকে অনুমোদন পায় খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)। প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় ছিল ৯৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা। কাজ শুরুতে বিলম্ব এবং অন্যান্য কারণে ব্যয় বেড়ে ২৫৯ কোটি টাকা হয়েছে। ২০২২ সালের ১২ জানুয়ারি কেডিএ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আতাউর রহমান লিমিটেড ও মাহাবুব ব্রাদার্সকে যৌথভাবে কার্যাদেশ দেয়। চুক্তি অনুযায়ী কাজ ২০২৪ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে অর্ধেক কাজও হয়নি।
কিন্তু ঠিকাদার ৭০ কোটি টাকার বিল তুলেন। জনদুর্ভোগের কারণে ৭ আগস্ট কেডিএ ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে। এরপর ঠিকাদার উল্টো কেডিএর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে এবং ৬০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবী করে।
দুদকের খুলনা উপপরিচালক মো. আবদুল ওয়াদুদ জানান, “শিপইয়ার্ড সড়কে অনিয়ম, কাজ ফেলে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি ও কেডিএ-ঠিকাদারের যোগসাজশের অভিযোগ পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ দেখে আমরা সরেজমিন পরীক্ষা করছি।”
তিনি আরও বলেন, সড়কের শেষ ৩০০ মিটারে মাটি খুঁড়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। এখানে ১০ ইঞ্চি বালুর স্তর, ১০ ইঞ্চি সাববেজ এবং ইট ও বালুর মিশ্রণ থাকার কথা থাকলেও কিছুই পাওয়া যায়নি। অথচ ঠিকাদার ইতিমধ্যে বিল তুলেছে।
দুদকের সহকারী পরিচালক রাকিবুল ইসলাম জানান, “কেডিএ কার্যালয় থেকে প্রকল্প-সংক্রান্ত নথি, ঠিকাদারের বিল এবং অন্যান্য কাগজপত্র সংগ্রহ করেছি। কাগজের তথ্য এবং বাস্তবতার মধ্যে বড় ফারাক রয়েছে।”
কেডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক আরমান হোসেন বলেন, “শেষ ৩০০ মিটার কাজ শেষ হয়নি। বাকি ৩.৫ কিলোমিটার ঠিক আছে। তাই শেষ অংশেই পরীক্ষা করা হচ্ছে।”