গ্যাস সরবরাহে সীমাবদ্ধতা এবং কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের কারণে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ আমদানি বাড়িয়েছে। শিল্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লোডশেডিং এড়াতেই এ পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-এর প্রতিবেদনে জানানো হয়, চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ আমদানি বেড়েছে ৭০ শতাংশ। এর বেশিরভাগই এসেছে আদানি পাওয়ারের একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে।
আগে দেশের বিদ্যুৎ চাহিদার বড় অংশই গ্যাস নির্ভর ছিল। ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো গ্যাস দিয়ে। কিন্তু অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা ও ব্যয় কমানোর লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ এখন বিদ্যুৎ আমদানি এবং স্থানীয় কয়লাভিত্তিক উৎপাদনের দিকে ঝুঁকছে।
সামিট পাওয়ারের পরিচালক আদিবা আজিজ খান বলেন, “এটি মূলত ব্যয় সাশ্রয়ের বিষয়। গ্যাস সার শিল্পে অপরিহার্য, অন্যদিকে তেল বা অন্যান্য উৎস থেকে সাশ্রয়ী দামে বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে।”
বিপিডিবির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “গ্যাসচাপ কম থাকায় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো পূর্ণ ক্ষমতায় চালানো যাচ্ছে না। আবার রক্ষণাবেক্ষণের কারণে কয়লা-ভিত্তিক উৎপাদনও কমে গেছে। তাই সরকারের হাতে বিকল্প ছিল না, আদানির বিদ্যুৎ দিয়েই চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়েছে।”
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের প্রথম সাত মাসে বিদ্যুৎ আমদানি বেড়ে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ১৫ দশমিক ৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। একই সময়ে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনও ১১ দশমিক ৯ থেকে বেড়ে ১২ দশমিক ৬ শতাংশ হয়েছে।
বিশ্লেষক শফিকুল আলমের মতে, মার্চ থেকে চাহিদা বাড়তে থাকায় সরকারকে বিদ্যুৎ আমদানি ও তেলভিত্তিক উৎপাদন বাড়াতে হয়েছে। তবে বিশ্লেষণ সংস্থা কেপলারের তথ্যমতে, এ সময় এলএনজি আমদানি ২৪ শতাংশ বাড়লেও গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বরং ১ দশমিক ২ শতাংশ কমেছে, যা ইঙ্গিত করে আমদানিকৃত গ্যাস বিদ্যুৎ উৎপাদনে তেমন কাজে লাগেনি।