জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। নির্বাচন ঘিরে পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রবেশপথে মোতায়েন রয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)সহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায়, প্রধান ফটক, মীর মশাররফ হোসেন হল-সংলগ্ন গেট, প্রান্তিক ফটক ও বিশ মাইল ফটকসহ প্রতিটি প্রবেশপথে পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত টহলও চলছে।
বাইরের কেউ প্রবেশ করতে চাইলে প্রথমেই থামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এরপর বৈধ পরিচয়পত্র যাচাইয়ের মাধ্যমে শুধুমাত্র শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা–কর্মচারী এবং অনুমোদিত ব্যক্তিদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা হাতে আইডি কার্ড নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত গাড়ি এবং জরুরি সেবার যানবাহন ছাড়া অন্য কোনো গাড়ি প্রবেশ করতে পারছে না। দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ সদস্য জানান, নির্বাচনের দিন ক্যাম্পাসে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে, পরিচয়পত্র ছাড়া কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
ক্যাম্পাসের পরিবেশ পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, প্রবেশপথে কড়া নিয়ন্ত্রণ থাকলেও ভেতরে শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করছেন। এখন প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মনোযোগ মূলত ভোটকেন্দ্রকে ঘিরেই।
জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, “সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে নিরাপত্তা সর্বোচ্চ পর্যায়ে বাড়ানো হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।”
এদিকে, নির্বাচন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে মোতায়েন করা হয়েছে ১৫০০ পুলিশ সদস্য, ৭ প্ল্যাটুন বিজিবি ও ৫ প্ল্যাটুন আনসার। পাশাপাশি ক্যাম্পাস ও আশপাশে অবস্থান করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্যরা।
অন্যদিকে, ১০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১২ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা পর্যন্ত মীর মশাররফ হোসেন হল-সংলগ্ন গেট ও প্রান্তিক গেট ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য সব ফটক বন্ধ থাকবে। এছাড়া ১১ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর-বাইরের সব ভাসমান দোকান, টারজান পয়েন্ট, মুরাদ চত্বর ও অন্যান্য নির্দিষ্ট দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে হলগুলোর ক্যান্টিন ও দোকান খোলা থাকবে এবং পর্যাপ্ত খাবার মজুদ রাখতে বলা হয়েছে।
এই সময়ের মধ্যে জরুরি বিভাগ (নিরাপত্তা, পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ইন্টারনেট) ছাড়া সব মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে। শুধু শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত গাড়ি এবং নির্বাচন কমিশনের অনুমোদিত গাড়িগুলো ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে।
এবারের জাকসু নির্বাচনে মোট ২৫টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৭৮ জন প্রার্থী। এর মধ্যে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ৯ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৯ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে ৬ জন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।