জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে নানা অভিযোগ, অনাস্থা ও বর্জনের মধ্য দিয়ে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ চলেছে বিকেল ৫টা পর্যন্ত, তবে কিছু হলে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে রাত ৮টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত ভোট নেওয়া হয়। সবচেয়ে বেশি ভোটার ছিল কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলে, যেখানে ভোট দিয়েছেন ৯৯১ জন।
নির্বাচনের শেষ দিকে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ছাত্রদল মনোনীত প্যানেল ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয়। একই সময়ে ছাত্র ইউনিয়ন (একাংশ) সমর্থিত ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেল নির্বাচনের প্রতি অনাস্থা জানায়। অন্যদিকে ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলও নির্বাচনে নানা অসংগতির অভিযোগ তোলে।
অনিয়মের অভিযোগে শহীদ তাজউদ্দিন, ফজিলাতুন্নেছা ও কবি নজরুল ইসলাম হলে ভোটগ্রহণ আংশিক বন্ধ ছিল কিছু সময়ের জন্য। তবে পরে শিক্ষার্থী ও প্রার্থীদের প্রতিবাদে ভোটগ্রহণ আবার শুরু হয়।
ছাত্রদল প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী তানজিলা হোসেন বৈশাখী বলেন, “তাজউদ্দিন হলে আমাদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি, ভোটার তালিকায় ছবি নেই, জাহানারা ইমাম হলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর হামলা হয়েছে। একই মেয়ে বারবার ভোট দিয়েছে। এটি আসলে কারচুপি ও প্রহসনের নির্বাচন, তাই আমরা বর্জন করতে বাধ্য হয়েছি।”
অন্যদিকে ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী স্মরণ এহসান জানান, “এই নির্বাচন সঠিক প্রক্রিয়া মেনে হয়নি। শুরু থেকেই আমাদের প্রার্থিতা বাতিল ও অনিয়ম করে আস্থা নষ্ট করা হয়েছে। তাই আমরা নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা জানাচ্ছি।”
এদিকে ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’-এর ভিপি প্রার্থী আরিফুল্লাহ আদিব অভিযোগ করেন, “প্রশাসন যথাযথ প্রস্তুতি নেয়নি। কেন্দ্রে পোলিং এজেন্টদের নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে। পাশাপাশি ক্যাম্পাসে সাবেক ছাত্রদল নেতাদের উপস্থিতি প্রশাসন উপেক্ষা করেছে।”
ছাত্রদল ভোট বর্জনের ঘোষণা দেওয়ার পর শিবির সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম বলেন, “আমরা সহাবস্থানের রাজনীতি চাই। ছাত্রদল ফিরে এলেও আমরা তাদের সঙ্গে আছি, না এলেও আমরা তাদের পাশে আছি। শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিচ্ছে, সেটিই মূল বিষয়।”
সব মিলিয়ে নানা অভিযোগ ও বিতর্কের মধ্য দিয়েই শেষ হলো জাকসুর ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া।