বলিউডের লাস্যময়ী নায়িকা দিয়া মির্জা সম্প্রতি কলকাতায় এসে পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধি বিষয়ক একটি আলোচনা সভায় যোগ দেন। তার মা বাঙালি হওয়ায় বাংলা ও বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে তার গভীর আত্মিক যোগ রয়েছে। কলকাতায় আসা তার কাছে যেন ঘরে ফেরার সমান। তিনি জানান, বাঙালি সংস্কৃতির প্রভাব তার ব্যক্তিত্বে দৃঢ়ভাবে বিরাজমান।
দিয়া বলেন, “আমি আধা বাঙালি। আমার মা বাঙালি, বাবা জার্মান। ৯ বছর বয়সে বাবাকে হারানোর পর আমি এক মুসলিম পরিবারে বড় হয়েছি। তারা আমাকে আদপ্ট করেছেন এবং সেই পারিবারিক শিক্ষাই আজও আমার সঙ্গে রয়েছে। মুসলিম পরিবার মানেই মেয়েরা কথা বলতে পারবে না—এমন কোনো ধারণা আমার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়নি। আমি সব ধরনের আলোচনায় অংশ নিতে শিখেছি।”
পরিবেশ সচেতনতার প্রসঙ্গে দিয়া বলেন, “দশ বছর ধরে আমি প্লাস্টিক ব্যবহার কমাচ্ছি। এখন এমন অবস্থা যে মাইক্রো প্লাস্টিক মানুষের শরীরেও পাওয়া যাচ্ছে। আমি সবসময় ছেলের জন্মদিন এনভায়রনমেন্ট ফ্রেন্ডলি রাখতে চেষ্টা করি, বেলুনের ব্যবহার এড়িয়ে। প্লাস্টিক আমাদের সন্তানের আয়ু কমাচ্ছে। তাই ছোট ছোট পদক্ষেপও পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ।”
দিয়া তার দৈনন্দিন জীবনেও সচেতন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন—মেটালের বোতলে জল রিফিল করা, কাপড়ের থলি ব্যবহার, একই পোশাক বারবার পরা এবং নিরামিষ খাদ্য গ্রহণ। তিনি বিশ্বাস করেন, এই ছোট পদক্ষেপগুলো বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
মাত্র ২৬ বছর বয়সে প্রযোজনা সংস্থা খোলার প্রসঙ্গে দিয়া বলেন, “পুরুষতান্ত্রিক ইন্ডাস্ট্রিতে নায়িকাদের জন্য সুযোগ সীমিত। অনেক চরিত্র আমার মানসিকতার সঙ্গে মিলত না। তাই নিজের প্রযোজনা সংস্থা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিই।”
দিয়া আরও যোগ করেন, “৪০ বছর বয়সে বুঝেছি না বলতে পারা কোনো লজ্জার বিষয় নয়। নিজের জন্য এবং পরিবারের জন্য প্রাধান্য দেওয়া কখনও দোষ নয়। আমার ১৬ বছরের কন্যা এবং টডলার ছেলে আমাকে শিখিয়েছে, না বলতে পারা এবং নিজের সীমা নির্ধারণ করা স্বাভাবিক ও প্রাসঙ্গিক।”
অভিনেত্রী কন্যা ও ছেলের প্রতিটি মুহূর্তকে মজার ও চ্যালেঞ্জিং হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, “মেয়ের মানসিক পরিবর্তনের কথা ভাবতে হয় আবার ছেলের সঙ্গে ছোটাছুটি করতে হয়। দুটোই আলাদা আনন্দ এবং চ্যালেঞ্জ।”