ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের পূর্ব বেগুনবাড়ি নতুনপাড়া গ্রামের রামদাড়া নদীর ওপর নির্মিত পুরোনো সেতুটি এখন আতঙ্কের নাম। চার দশকের পুরনো এই সেতুটি নড়বড়ে হয়ে পড়ায় প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন হাজারো মানুষ। স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
স্থানীয়দের মতে, সেতুটি ১৯৮০ সালের দিকে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আমলে হাঁটার পথ হিসেবে নির্মাণ করা হয়েছিল। দীর্ঘদিনের যানবাহন চলাচলের কারণে সেতুর কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়েছে, পলেস্তারাও খসে পড়ছে। এখন বড় কোনো গাড়ি উঠলেই সেতু থরথর করে কেঁপে ওঠে।
কৃষিপ্রধান এলাকাগুলোর কৃষকরা ধান, ভুট্টা, সরষে ও পাটসহ উৎপাদিত ফসল রিকশা-ভ্যানে বাজারে পাঠাচ্ছেন। এতে সময় ও খরচ অনেক বেড়ে যাচ্ছে।
সেতুর পূর্ব পাশে দুটি বিদ্যালয় থাকায় শিক্ষার্থীরাও প্রতিদিন ভয়ে ভয়ে পারাপার করছে। ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী হামিম, রাইসুল ও জমিরুল বলেন, “আমরা প্রতিদিন ভেবে ভয় পাই, সেতুটি ভেঙে নদীতে পড়ে যাব। এখানে নতুন ব্রিজ খুব দরকার।”
কৃষক রমজান আলী বলেন, “ভয়ঙ্কর ঝুঁকির মধ্যে ফসল বাজারে পৌঁছে দিতে হয়। বড় বোঝাই গাড়ি সেতু পার করতে পারছে না, নদীর তল দিয়ে নিয়ে যেতে হচ্ছে। এতে সময় ও শ্রম অনেক বেড়ে যায়।” আরেক কৃষক রফিকুল ইসলাম যোগ করেন, “সেতুটি ভেঙে গেলে ফসলও নদীতে পড়বে। বড় কোনো গাড়ি উঠলে এখন সেতু কেঁপে ওঠে। নতুন ব্রিজ দ্রুত তৈরি না হলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে।”
নতুনপাড়া এলাকার বাসিন্দা সাদ্দাম বলেন, “সেতুর অবস্থা ভয়াবহ। বড় গাড়ি উঠলে মনে হয়, এখনই ভেঙে পড়বে। দ্রুত নতুন ব্রিজ নির্মাণের দাবি রাখছি।”
ভ্যানচালক আরিফ বলেন, “একসাথে দুটি ভ্যান চলাচল করা সম্ভব নয়। একটি ভ্যান পার হলে অন্য ভ্যানকে নিচে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।”
এলজিইডির সদর উপজেলা প্রকৌশলী মাবুদ হোসেন জানান, সেতুটি মূলত হাঁটার জন্য নির্মিত হয়েছিল এবং বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে, বিশেষ করে স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিরাপদ পারাপারের কথা মাথায় রেখে।