টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিপাত এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে রাঙ্গামাটির কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং দোকানপাট তলিয়ে গেছে, ফলে হাজারো মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার বাঘাইছড়ি, লংগদু এবং বরকল উপজেলার অনেক নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। প্লাবিত এলাকায় বিভিন্ন স্থাপনা ডুবে যাওয়ার পাশাপাশি কৃষি জমি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে কাচালং নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঘাইছড়ি উপজেলার রূপকারী ইউনিয়ন, মাস্টার পাড়া, মধ্যম পাড়া, হাজী পাড়া, মাদ্রাসা পাড়া, এফ ব্লক, বটতলী, আমতলী এবং গুচ্ছগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে গেছে।
বাঘাইছড়ি প্রেস ক্লাবের সভাপতি আব্দুল মাবুদ বলেন, “কাপ্তাই বাঁধ অতিরিক্ত পানি আটকে রাখায় হাজারো পরিবার বন্যায় পানিবন্দী হয়েছে। গত ২-৩ মাসে চারবারের মতো পরিবারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য অতিরিক্ত পানি ধরে রাখার কোনো প্রয়োজন নেই, মানুষ বাঁচতে পারবে না হলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মানে কী?”
কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী জানান, হ্রদের পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে জলকপাটগুলো সাড়ে তিনফুট খোলা হয় এবং প্রতি সেকেন্ডে ৬৩ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হচ্ছে। হ্রদে বর্তমানে পানি স্তর ১০৮.৭৪ ফুট মিনস সি লেভেল। বর্তমানে পাঁচটি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রতি সেকেন্ডে ৩২ হাজার কিউসেক পানি নিষ্কাশিত হচ্ছে এবং ২২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।
এর আগে, কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ২০ আগস্ট রাত ৮টা থেকে ১৬টি জলকপাট খুলে চারদিন পানি ছাড়া হয়। এরপর ২৩ আগস্ট বিকেল ৫টায় জলকপাট বন্ধ করা হয়। এর আগে ৪ আগস্টও ১৬টি জলকপাট খুলে আটদিন পানি ছাড়া হয় এবং ১২ আগস্ট সকাল ৮টায় পানি নিষ্কাশন বন্ধ ঘোষণা করা হয়।