জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের কমিশন থেকে আরেক সদস্য পদত্যাগ করেছেন। শনিবার দুপুর ২টার দিকে নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান নিশ্চিত করেছেন। তবে পদত্যাগের কারণ নিয়ে ড. রেজওয়ানা বিস্তারিত কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি; শুধু জানান, তিনি লিখিতভাবে কমিশনকে বিষয়টি অবহিত করেছেন।
এর আগে শুক্রবার রাতে কমিশনের আরেক সদস্য জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান। তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচনে অনিয়ম ও ত্রুটিগুলো নিয়ে বারবার মতামত দিলেও তা উপেক্ষা করে কমিশন ভোট গণনা চালিয়ে গেছে। এ কারণে তিনি আর দায়িত্ব পালন করতে রাজি নন।
গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি হলে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগের রাতে ভোটগণনার মেশিন সরবরাহকারীর রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিয়ে বিতর্ক ওঠায় কমিশন মেশিন বাদ দিয়ে হাতে গণনার সিদ্ধান্ত নেয়। ভোট চলাকালে ছাত্রদল ও বামপন্থী কয়েকটি প্যানেল অভিযোগের ভিত্তিতে নির্বাচন বর্জন করে। আটটি প্যানেলের মধ্যে পাঁচটির ৬৮ জন প্রার্থী ভোট থেকে সরে দাঁড়ালেও বাকি তিনটি প্যানেলের ১১১ জন প্রার্থী শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে টিকে ছিলেন।
ভোট শেষে বৃহস্পতিবার রাতে ব্যালট বাক্স সিনেট ভবনে নেওয়া হয় এবং রাত ১০টার পর গণনা শুরু হয়। তবে নানা অভিযোগে গণনা প্রায় তিন ঘণ্টা বন্ধ থাকে। এরপর ধীরগতিতে গণনা চলতে থাকায় প্রার্থীরা অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
এদিকে শুক্রবার সকালে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌসের মৃত্যুর ঘটনায় ক্যাম্পাসে শোকের ছায়া নেমে আসে। তবে সবকিছুর মাঝেও অনিয়মের অভিযোগ, ধীরগতি এবং কমিশনের অভ্যন্তরীণ মতপার্থক্য পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে। একে একে কমিশনারদের পদত্যাগে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।