যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনৈতিক কর্মী ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী চার্লি কার্ককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ইউটাহ থেকে ২২ বছর বয়সী টাইলার রবিনসনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে ধরতে পুলিশ ৩৩ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালায় এবং অবশেষে রবিনসনের বাবা পুলিশের কাছে তাকে আত্মসমর্পণে রাজি করান।
চার্লি কার্ক ইউটাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। হত্যাকারী গ্রেপ্তারের ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, যিনি সন্দেহভাজনকে মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি করারও ঘোষণা দেন। কার্কের মৃত্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্টসহ দেশটির প্রভাবশালী ব্যক্তিরা শোক প্রকাশ করেছেন।
কার্ক ট্রাম্পের একজন ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিলেন। ট্রাম্প তার মৃত্যুর পর একটি ভিডিও বার্তায় তাকে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম’ দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সও জানিয়েছেন, কার্ক ট্রাম্পের প্রচারণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং তরুণ রিপাবলিকানদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন।
চার্লি কার্ক কখনও সরকারি পদে অধিষ্ঠিত হননি। শিকাগোর একজন অজানা কর্মী থেকে তিনি ট্রাম্পের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মুখ হয়ে ওঠেন। ২০১২ সালে তিনি টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ (TPUSA) প্রতিষ্ঠা করেন, যা কলেজ ক্যাম্পাসে রক্ষণশীল কার্যক্রমকে এগিয়ে নিত। অনলাইনে সক্রিয় হয়ে তিনি তরুণদের মধ্যে রক্ষণশীলতার বার্তা ছড়িয়ে দেন এবং ২০১৬ সালে মাত্র ২২ বছর বয়সে রিপাবলিকান জাতীয় সম্মেলনে বক্তৃতা দেওয়ার সুযোগ পান।
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে কার্কের প্রভাব আরও বৃদ্ধি পায়। তিনি মার্কিন প্রশাসনের নিয়োগকারীদের যাচাই-বাছাইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং ট্রাম্প পরিবারসহ সরকারি পদগুলোর সাথে প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হন। ট্রাম্প প্রশাসনের সাবেক কর্মকর্তা লরেন্স মুইর জানিয়েছেন, কার্কের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তরুণদের কাছে পৌঁছানোর দক্ষতা তাকে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছিল।
হত্যাকাণ্ডের তদন্তে জানা গেছে, সন্দেহভাজন টাইলার রবিনসন হত্যার আগে কার্ককে লক্ষ্য করে পরিকল্পনা করেছিলেন এবং ক্যাম্পাসের কাছে একটি মাউসার বোল্ট অ্যাকশন রাইফেল রাখা ছিল। রবিনসন অতীতে নির্দলীয় ভোটার ছিলেন এবং তার পরিবার রিপাবলিকান সমর্থক। এই হত্যাকাণ্ড মার্কিন রাজনৈতিক বিভাজনের মধ্যেও ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে।