বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন (বিএসসি) প্রথমবারের মতো নিজস্ব তহবিল ব্যবহার করে দুটি নতুন জাহাজ কিনতে যাচ্ছে। কমডোর মাহমুদুল মালেক জানান, এটি সংস্থার জন্য এক যুগান্তকারী উদ্যোগ। নতুন দুই জাহাজ চালু হলে বছরে সংস্থার আয় অন্তত ১৫০ কোটি টাকা বৃদ্ধি পাবে। প্রতিটি জাহাজের ধারণক্ষমতা ৫৫ থেকে ৬৬ হাজার টন। বর্তমানে একটি জাহাজের নির্মাণ কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ এবং অপরটির ৬০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। নতুন জাহাজগুলিতে বছরে ১৫০ নাবিকের কর্মসংস্থান হবে।
বিএসসি একসময় ৩৮টি জাহাজের বিশাল বহরে পরিচালিত হত, যা বর্তমানে কমে মাত্র পাঁচটি জাহাজে নেমে এসেছে। কমডোর মাহমুদুল মালেক বলেন, ১৯৭২ সালের জুনে ‘এমভি বাংলার দূত’ জাহাজ দিয়ে বিএসসি সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহন শুরু করে। প্রথম ১০ বছরে আরও ২৭টি জাহাজ সংস্থার বহরে যুক্ত হয় এবং পরবর্তীতে সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৩৮-এ পৌঁছে। তবে ১৯৯১ সালের পর নতুন জাহাজ যুক্ত হয়নি। দীর্ঘ সময়ের লোকসান ও নানা সমস্যার কারণে বহর সংকুচিত হয়। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সংস্থা ১,৮৪৩ কোটি টাকায় ছয়টি নতুন জাহাজ সংগ্রহ করলেও এর মধ্যে একটি দুর্ঘটনার কারণে পরিত্যক্ত হয়।
বর্তমানে বিএসসির বহরে পাঁচটি জাহাজ রয়েছে—এর মধ্যে তিনটি তেল পরিবহনকারী ট্যাঙ্কার এবং দুটি সাধারণ পণ্য পরিবহনের জন্য বাল্ক জাহাজ। নতুন দুটি বাল্ক জাহাজ যুক্ত হলে বহরের সংখ্যা সাতটি হবে। এছাড়া আরও তিনটি জাহাজ কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, যার জন্য উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব প্রণয়ন করা হচ্ছে। সংস্থাটি প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের মাধ্যমে এই জাহাজগুলো সংগ্রহ করবে এবং আশা করা হচ্ছে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
কমডোর মাহমুদুল মালেক আরও জানান, নতুন দুটি জাহাজ যুক্তরাষ্ট্রের হেলেনিক ড্রাই বাল্ক ভেঞ্চারস এলএলসি থেকে ৯৩৬ কোটি টাকায় কেনা হচ্ছে। জাহাজ দুটি চীনের নেন ইয়াং শিপইয়ার্ডে নির্মিত হচ্ছে। তাদের মধ্যে একটি জাহাজের নির্মাণ কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ এবং অপরটির ৫০ শতাংশের বেশি সম্পন্ন। সম্প্রতি নৌপরিবহন উপদেষ্টা নেতৃত্বে চীনের জাহাজ কারখানা পরিদর্শন করা হয়েছে।
নতুন জাহাজগুলো চালু হলে বিএসসির আয় বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বহরের পুনর্গঠনসহ সংস্থার কার্যক্রমে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।