Saturday, September 13, 2025
spot_imgspot_img
Homeরাজনীতি“জনগণের স্বার্থে রাজনীতি করুন, এমপি-মন্ত্রী হওয়ার জন্য পাগল হবেন না : গয়েশ্বর”

“জনগণের স্বার্থে রাজনীতি করুন, এমপি-মন্ত্রী হওয়ার জন্য পাগল হবেন না : গয়েশ্বর”

ফ্যাসিবাদ ও মৌলবাদ থেকে দেশকে রক্ষা করতে চাইলে রাজনীতিবিদদের নিঃস্বার্থভাবে জনগণের স্বার্থে রাজনীতি করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

তিনি বলেন, “এমপি-মন্ত্রী হওয়ার জন্য পাগল হবেন না। যদি প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চান এবং দেশকে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে চান, তাহলে আগে ব্যক্তিগত স্বার্থ ত্যাগ করতে হবে। তাহলেই সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা সম্ভব।”

শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে হিউম্যান রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস ফাউন্ডেশন (হিউরাফ) আয়োজিত ‘জুলাই বিপ্লব এবং আগামীর গণতন্ত্র ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

গয়েশ্বর বলেন, “আমাদের অবস্থা এমন হয়েছে যে, মুসল্লির চেয়ে ইমাম বেশি কথা বলেন। জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা সবাই আলাদাভাবে ব্যাখ্যা করছেন। ৫ আগস্টের পর থেকে বিষয়টির ভিন্ন ভিন্ন রূপ দেখা দিয়েছে। আগে আমরা একসঙ্গে সংগ্রাম করেছি, জেল খেটেছি, কিন্তু এখন ব্যক্তিগত স্বার্থে অনেকেই আলাদা সুরে কথা বলছেন।”

তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপিকে এখন ভারতের দালাল বলা হচ্ছে। অথচ যারা বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন, তারাই নতুন করে বৈষম্য সৃষ্টি করছেন। এতে করে জনগণের স্বপ্ন ভেঙে যাচ্ছে, আর দেশ ভুল পথে এগোচ্ছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য মেয়াদ নির্ধারিত ৯০ দিন। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ সীমাহীন—যতদিন তারা থাকবে, ততদিন বৈধ। প্রশ্ন হলো, তারা যদি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে আন্তরিক হন, তাহলে এত দীর্ঘ সময় কেন লাগছে? তত্ত্বাবধায়ক সরকার ৯০ দিনে নির্বাচন করেছে, অথচ এদের দুই বছরও যথেষ্ট হচ্ছে না।”

তিনি আরও বলেন, “মৌলবাদীরা বেহেশতের টিকিট বিক্রি করছে। তাদের সঙ্গে থাকলে জান্নাত, না থাকলে দোজখ—এমন প্রচার চলছে। অথচ নিজেরাই জানে না তারা জান্নাতে যাবে কিনা। সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান ভয়ঙ্কর। ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি পেলেও এখন ধর্মীয় উগ্রতা বাড়ছে, যা গণতন্ত্র ও মুক্তচিন্তার জন্য দ্বিগুণ হুমকি। এভাবে রাষ্ট্র চলতে থাকলে মব মানসিকতা তৈরি হবে।”

ধর্ম ও রাষ্ট্রব্যবস্থার মধ্যে বিরোধ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, “অপব্যাখ্যার কারণে মানুষ ন্যায়ের কথা বলতে পারে না। অনেক দল আছে যারা ট্র্যাভেল এজেন্সির মতো বেহেশতের টিকিট বিক্রি করছে।”

অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, “সংস্কারের নামে অনেক কুসংস্কার চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিদেশ থেকে বুদ্ধিমান লোক এনে কাজ করানো হচ্ছে, কিন্তু এত বুদ্ধি এক জায়গায় হলে উল্টো ফল হয়। আমরা ৩১ দফার ভিত্তিতে প্রায় ৬০টি দল এক হয়েছিলাম ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে। সেখানে পিআরের কোনো কথা ছিল না। আজ যারা পিআরের দাবি তুলছেন, তখন কেন তারা ৩১ দফায় তা দেননি?”

সভায় সভাপতিত্ব করেন হিউরাফের আহ্বায়ক আহমেদ হুসেইন। অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলামসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments