আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদতের জন্য, যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো নামাজ। নামাজ কেবল ব্যক্তিগত নয়, সামাজিক ও আধ্যাত্মিক জীবনের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, “নামাজ হলো দ্বীনের স্তম্ভ।” অর্থাৎ নামাজ ছাড়া ধর্মের ভিত্তি গড়ে ওঠে না।
রাসুল (সা.) বলেছেন, “আমার চোখের প্রশান্তি রয়েছে নামাজে।” এটি নির্দেশ করে নামাজ শুধু শরীয়তের বিধান নয়, বরং একজন মুমিনের আত্মিক প্রশান্তির উৎস। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, “তুমি সূর্য হেলার সময় থেকে রাতের অন্ধকার পর্যন্ত নামাজ কায়েম করো এবং ফজরের নামাজ কায়েম করো।” (সুরা বনি ইসরাঈল : ৭৮) অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, “নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীলতা ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।” (সুরা আনকাবুত : ৪৫)
তাই নামাজের মর্যাদা অত্যন্ত বেশি এবং নামাজি ব্যক্তির মর্যাদাও উচ্চ।
চোখ খোলা নাকি বন্ধ রাখা উচিৎ?
প্রখ্যাত ইসলামি স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, নবীজির সুন্নাহ অনুযায়ী সাধারণ অবস্থায় নামাজের সময় চোখ খোলা রাখা সুন্নাহসম্মত। হাদিস থেকে জানা যায়, নবীজি (সা.) সালাতরত অবস্থায় সিজদার মধ্যবর্তী জায়গা দেখতে পান। মুসল্লিরাও সালাতরত অবস্থায় সিজদার জায়গার দিকে তাকাবেন।
তবে, যদি সালাতের সময় চোখের সামনে এমন কিছু থাকে যা দেখলে গোনাহ হবে, অথবা স্বাস্থ্যগত কারণে চোখ বন্ধ রাখতে হয়, সেক্ষেত্রে চোখ বন্ধ রেখে নামাজ আদায় করা জায়েজ।
মনোযোগ বাড়ানোর জন্য চোখ বন্ধ রাখা
মনোযোগ ধরে রাখার জন্য কেউ চাইলে চোখ বন্ধ রাখতেও পারবে। উলামায়ে কেরামের মধ্যে এ বিষয়ে ভিন্নমত আছে:
- একদল উলামা বলেছেন, সাধারণ অবস্থায় চোখ বন্ধ রেখে সালাত করা মাকরুহ, কারণ নবীজি (সা.) চোখ খোলা রেখেই সালাত আদায় করতেন এবং মুসল্লিদেরও নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া, ইহুদিরা চোখ বন্ধ রেখে উপাসনা করত, তাই ইসলামে তা অনুসরণ করা উচিত নয়।
- অন্য দল অনুমতি দিয়েছেন, কারণ নামাজে মনোযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মনোযোগের অভাবে সালাত অনেকটাই অর্থহীন হয়ে যেতে পারে। তাই চোখ বন্ধ রাখা ওজরের ভিত্তিতে জায়েজ।
উপসংহার:
শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, সাধারণ অবস্থায় চোখ খোলা রেখে নামাজ আদায় করা উচিত। তবে মাঝে মাঝে বেশি মনোযোগ লাভ বা বিশেষ ওজরের কারণে চোখ বন্ধ রাখাও জায়েজ।