জাতীয় বেতন কমিশনের চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান জানিয়েছেন, নির্ধারিত ছয় মাসের আগেই নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে। রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে এই বিষয়টি আলোচনা করা হয়েছে।
জাকির আহমেদ খান বলেন, গত দশ বছরে মূল্যস্ফীতি ও জিডিপি বেড়েছে, তবে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত কর্মকর্তাদের বেতন তা অনুযায়ী বৃদ্ধি পায়নি। তাই কমিশন নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণের পাশাপাশি বিশেষায়িত চাকরির জন্য আলাদা কাঠামো, আয়কর ও ভাতা বিবেচনায় বেতন সমন্বয়, বাড়িভাড়া, চিকিৎসা, যাতায়াতসহ অন্যান্য সুবিধা, সময়োপযোগী পেনশন এবং অবসর-সুবিধা নির্ধারণের কাজ করছে।
তিনি আরও জানান, কমিশন টেলিফোন, গাড়ি ও মোবাইল ফোন-সংক্রান্ত আর্থিক সুবিধা, নগদ ও রেশন সুবিধা যৌক্তিকীকরণ, বেতনের গ্রেড ও ইনক্রিমেন্টে অসংগতি দূরীকরণসহ একটি পূর্ণাঙ্গ বেতন কাঠামোর সুপারিশ প্রণয়ন করবে।
কমিশন ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছে এবং তারা আশা করছে, ছয় মাসের নির্ধারিত সময়ের আগেই চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারবে। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত কর্মকর্তাদের জন্য একটি যৌক্তিক বেতন কাঠামো নির্ধারণের নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে বর্তমান বাস্তবতার সঙ্গে তা সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে কর্মকর্তাদের জন্য স্বাস্থ্যবীমার গুরুত্বেও জোর দেন। তিনি বলেন, “বেতন বাড়ানো হলেও এক অসুখেই অনেকের সম্বল হারিয়ে যেতে পারে। স্বাস্থ্যবীমা থাকলে পরিবার নিশ্চিন্তে থাকে। এই ধরনের মডেল প্রতিবেশী দেশগুলোতেও আছে।”
উল্লেখ্য, এক দশক পর নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণের জন্য জাতীয় বেতন কমিশন গঠন করা হয়েছে। এটি সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মঞ্জুরিপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন, ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা পর্যালোচনা করে সুপারিশ করবে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান।