ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সংসদীয় আসনের পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে আন্দোলনকারীরা সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে থানা ও উপজেলা পরিষদে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে। দুপুর ১২টা ৪৫ থেকে ১টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত আধা ঘণ্টার মধ্যে এই তাণ্ডব ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, আন্দোলনকারীরা প্রথমে উপজেলা পরিষদের হল রুমে ঢুকে শতাধিক চেয়ার, ১০টি ফ্যান ও ৩০টির বেশি লাইট ভাঙচুর করে। এরপর তিনতলা বিশিষ্ট পরিষদ ভবনের প্রতিটি তলায় সাতটি করে মোট ২১টি কক্ষে ক্ষতি সাধিত হয়। এ সময় সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙা হয় এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের কাচও ভাঙা হয়। পরিষদ চত্বর ও অফিসার্স ক্লাবের গ্যারেজে সাতটি মোটরসাইকেল আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া উপজেলা অফিসার্স ক্লাবও ভাঙচুরের শিকার হয়।
অন্যদিকে ভাঙ্গা থানায় হামলা চালিয়ে পুলিশের তিনটি গাড়ি ও একটি বড় রিজার্ভ ভ্যান ধ্বংস করা হয়। থানার প্রাঙ্গণে অন্তত চারটি মোটরসাইকেলও আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। থানার ব্যানার ও ভবনের কাচও ভাঙা হয়েছে।
ঘটনার পর পুরো ভাঙ্গা এলাকাটি শান্ত রয়েছে, তবে ঢাকা-বরিশাল ও ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক এখনও অবরোধে রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হলেও সড়ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রোকিবুজ্জামান।
ভাঙা পৌরসভার কাপুড়িয়া সদরদী এলাকার বাসিন্দা ও বাজার ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম মৃধা বলেন, হামলার সময় লোকজন রামদা ও লাঠিসোঁটা নিয়ে ঢুকে পড়ে এবং পেট্রল ব্যবহার করে মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। তিনি জানান, এই সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো বাধা দেয়নি।
স্থানীয়দের আন্দোলনের মূল কারণ হলো ফরিদপুর-৪ আসনের আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন কেটে ফরিদপুর-২ আসনে সংযুক্ত করার সিদ্ধান্ত। দুই সপ্তাহ ধরে তারা এই পরিবর্তনের প্রতিবাদে আন্দোলন চালিয়ে আসছে। রোববার থেকে টানা তিন দিন মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সোমবার ছিল দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচি, যেখানে বেলা ১১টা থেকে ঢাকা-বরিশাল ও ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধের পাশাপাশি ভাঙ্গা সদরে হামলা-ভাঙচুর সংঘটিত হয়।