চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে অবৈধভাবে প্রবেশের কারণে আটক হয়েছিলেন ভারতীয় নাগরিক রামদেব মাহাতো (৬০)। আদালত তাকে ৬ মাসের সাজা দিয়েছিলেন। তবে মামলার নথিতে ভারতের ঠিকানায় গড়মিল থাকার কারণে সাজা শেষ হলেও দীর্ঘ ছয় বছর ধরে তিনি নিজের দেশে ফিরতে পারেননি। অবশেষে স্বেচ্ছাসেবী ও গণমাধ্যমকর্মী শামসুল হুদার উদ্যোগে আজ রামদেব নিজ দেশে ফিরে গেলেন।
ঘটনাটি ২০১৫ সালের চলচ্চিত্র ‘বজরঙ্গি ভাইজান’-এর গল্পের মতোই। চলচ্চিত্রে দেখা যায়, পাকিস্তান থেকে ভারতে আটকে পড়া এক শিশু জন্মভূমিতে ফেরার চেষ্টা করে, এবং সালমান খান অভিনীত চরিত্র তাকে নানা বাধা পেরিয়ে দেশে ফেরাতে সাহায্য করে। রামদেবের ঘটনাতেও স্বেচ্ছাসেবী শামসুল হুদা এমন ভূমিকা পালন করেছেন।
সোমবার দুপুরে শিবগঞ্জ উপজেলার সোনামসজিদ স্থলবন্দর আইসিপি গেট দিয়ে রামদেবকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের হাতে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় উভয় দেশের ইমিগ্রেশন পুলিশ, বিজিবি ও বিএসএফের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রামদেব মাহাতো ভারতের বিহার প্রদেশের বাতিয়া জেলার মাজালিয়া থানার গুদারা পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা। তার বাবা তাপা মাহাতো। তিনি ২০১৮ সালের ৩০ নভেম্বর অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় আটক হন। আদালতের ৬ মাসের সাজা ২০১৯ সালের ২৯ মে শেষ হওয়া সত্ত্বেও সঠিক ঠিকানার অভাবে দীর্ঘদিন কারাগারে থাকতে হয় তাকে।
স্বেচ্ছাসেবী ও গণমাধ্যম কর্মী শামসুল হুদা জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কারাগারে তখন ১০ জন প্রত্যাবাসন প্রার্থী সাজা শেষে নিজ দেশে ফেরার অপেক্ষায় ছিলেন। ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে রামদেবের ঠিকানা এবং পরিবারের খোঁজ পাওয়া যায়। ২০২৩ সালের ২০ নভেম্বর তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ সম্পন্ন হয়। প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয় এবং নাগরিকত্ব যাচাই-বাছাই শেষে ভারতীয় দূতাবাস ২০২৪ সালের ১৮ মার্চ ছাড়পত্র পাঠায়। দীর্ঘ আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শেষে সোমবার রামদেব মাহাতো অবশেষে নিজ দেশে ফিরেছেন।
রামদেব দেশে ফেরার আগ মুহূর্তে আনন্দে কেঁদে ফেলেন এবং স্বেচ্ছাসেবী শামসুল হুদার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।