নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কারকি জানিয়েছেন, তিনি সর্বোচ্চ ছয় মাস দায়িত্ব পালন করবেন। আগামী বছরের ৫ মার্চ অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকারের কাছে তিনি দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) শপথ নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো দেওয়া বক্তব্যে সুশীলা কারকি বলেন, “আমি এই পদে আসতে চাইনি। তবে রাজপথের বিক্ষোভকারীদের আহ্বান উপেক্ষা করাও সম্ভব হয়নি।”
সম্প্রতি তরুণদের নেতৃত্বে নেপালে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হলে কে পি শর্মা অলি নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন ঘটে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে তখন ৭০ জনের বেশি মানুষ নিহত হন। পরে প্রেসিডেন্ট ও সেনাপ্রধান বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সুশীলাকে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন।
নিজের বক্তব্যে সুশীলা কারকি বলেন, “আমাদের জেন-জি প্রজন্মের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কাজ করতে হবে। তারা দুর্নীতির অবসান, সুশাসন ও অর্থনৈতিক সমতা চায়।”
তিনি আরও বলেন, সরকারি স্থাপনায় ভাঙচুরের ঘটনাকে দেখে তিনি লজ্জিত। তার ভাষায়, “যদি এসব ধ্বংসযজ্ঞে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা সত্যিই নেপালি হয়ে থাকে, তবে তাদের নেপালি বলা কঠিন।”
এখন তার মূল চ্যালেঞ্জ হলো আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা, ভাঙচুর হওয়া পার্লামেন্ট ভবন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা পুনর্নির্মাণ করা। পাশাপাশি পরিবর্তনের দাবিতে রাস্তায় নামা তরুণদের এবং গণতান্ত্রিক ধারা ও সাংবিধানিক শৃঙ্খলা নিয়ে শঙ্কিত নাগরিকদের আশ্বস্ত করাও তার দায়িত্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রয়টার্স জানায়, দুর্নীতি, বেকারত্ব, বৈষম্য এবং রাজনীতিবিদদের স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের ক্ষোভ নেপালে এবার চরমে পৌঁছায়। সরকার সম্প্রতি ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বার্তা আদান–প্রদানের অ্যাপ বন্ধ করে দিলে তরুণদের মধ্যে ক্ষোভ বিস্ফোরিত হয়। ৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া টানা দুই দিনের বিক্ষোভ সহিংস রূপ নেয়। এ সময় রাজনীতিবিদদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও পার্লামেন্ট ভবনে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২ জনে, এর মধ্যে তিনজন পুলিশ সদস্যও রয়েছেন।