প্রবাসী আয় ও রপ্তানি প্রবাহ বৃদ্ধির কারণে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় মুদ্রার দর কমার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলো থেকে ডলার কিনে মুদ্রার দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২৬টি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে মোট ৩৫৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্রয় করেছে। মাল্টিপল প্রাইস অকশন (এমপিএ) পদ্ধতিতে এই লেনদেনে ডলারের এক্সচেঞ্জ রেট নির্ধারিত হয় প্রতি ডলার ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা। অকশনের কাট-অফ রেটও একই রেটেই স্থির করা হয়েছে।
চলতি অর্থবছর (২০২৫-২৬) এখন পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ১.৭৫ বিলিয়ন ডলার ক্রয় করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে ডলারের চাহিদা কমার কারণে দাম কিছুটা নিম্নমুখী ছিল। যদি এই অবস্থায় দাম আরও কমে যেত, তবে রপ্তানিকারক ও প্রবাসীরা অনুৎসাহী হতে পারতেন। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই পদক্ষেপ মূলত বাজারে ডলারের দর একটি নির্দিষ্ট সীমার নিচে না নামার নিশ্চয়তা দিচ্ছে।
গত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক বাজার থেকে ক্রয়-বিক্রয় করে আসছে। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে ধীরে ধীরে ক্রয়ের মাধ্যমে রিজার্ভের উপর চাপ কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, আজকের লেনদেনের ফলে রিজার্ভ আরও শক্তিশালী হবে।
বিশ্লেষকরা বলেন, এমপিএ পদ্ধতিতে ডলার কেনা-বেচার ফলে স্বচ্ছ ও প্রতিযোগিতামূলক দাম নির্ধারণ সম্ভব হচ্ছে, যা ব্যাংকগুলোর জন্য ইতিবাচক। তবে দীর্ঘমেয়াদি বাজার স্থিতিশীলতার জন্য আমদানি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানো প্রয়োজন। রিজার্ভের চাপ ও বৈদেশিক লেনদেন ঘাটতির কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিটি পদক্ষেপ বাজারে বড় প্রভাব ফেলছে। এই ধরনের হস্তক্ষেপ বাজারে আস্থা ফেরাতে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।