আসন্ন নির্বাচনের আগে জুলাই সনদের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন, সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন, জুলাই গণহত্যার বিচার, নির্বাচনী সমতল মাঠ নিশ্চিতকরণ এবং জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
সোমবার রাজধানীর মগবাজারের আল ফালাহ মিলনায়তনে দলের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের সংবাদ সম্মেলনে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরে কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায়, ১৯ সেপ্টেম্বর বিভাগীয় শহরে এবং ২৬ সেপ্টেম্বর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করবে জামায়াত।
এর আগে রবিবার একই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক। যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ চরমোনাই পীর ও আবদুল বাসিত আজাদের নেতৃত্বাধীন খেলাফত মজলিসও একই কর্মসূচি ঘোষণার কথা রয়েছে।
শনিবার এনসিপি, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ ও নেজামে ইসলাম পার্টি বৈঠক করে। তবে এনসিপি, এবি পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদ শুধুমাত্র উচ্চকক্ষে পিআর ব্যবস্থার পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় তারা যুগপৎ আন্দোলনে থাকছে না। যদিও সনদ বাস্তবায়ন এবং আওয়ামী লীগের সহযোগী দলগুলোর রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিতে তারা সমর্থন জানিয়েছে।
বিএনপি জানিয়েছে, সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো আগামী সংসদে দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হোক। কিন্তু জামায়াত ভোটের আগে সংবিধান সংশোধন ও জুলাই সনদের বাস্তবায়ন চাচ্ছে। দলটি প্রভিনশিয়াল সাংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে সনদের আইনগত ভিত্তি দাবি করছে।
ডা. তাহের সংবাদ সম্মেলনে বলেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগে সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হবে। এ অবস্থায় জনগণের অভিপ্রায় অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হবে, যার বৈধতার উৎস সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদ।
তিনি আরও বলেন, গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্র সংস্কার ও স্বৈরাচার ঠেকাতে বিভিন্ন সংস্কার কমিশন গঠিত হয়েছিল। সেগুলোর সুপারিশের ভিত্তিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ১৬৬টি প্রস্তাব তৈরি করে এবং দীর্ঘ আলোচনার পর ৮৪টি প্রস্তাব সিদ্ধান্ত আকারে গৃহীত হয়। তবে কিছু প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্নমতের কারণে সিদ্ধান্ত হয়নি। সরকার জুলাই জাতীয় সনদ প্রস্তুত করেছে, কিন্তু জামায়াত চাইছে এর আইনগত ভিত্তি নিশ্চিত করতে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামিদুর রহমান আজাদ, আবদুল হালিমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।