জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার পর তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হবেন বলে জানিয়েছে প্রসিকিউশন।
এদিন ট্রাইব্যুনালের বিচার কার্যক্রম শুরু হবে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের অবশিষ্ট সাক্ষ্যগ্রহণ দিয়ে। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলে তাকে জেরা করবেন শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। এরপরই নাহিদ ইসলামের সাক্ষ্য নেওয়া হবে।
এর আগে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টা ২০ মিনিট থেকে বিকেল পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণ চলে। শেষ না হওয়ায় অবশিষ্ট সাক্ষ্য ও জেরার জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়।
মামলার ১৪তম দিনের (৯ সেপ্টেম্বর) সাক্ষ্য গ্রহণে ছয়জন সাক্ষী অংশ নেন। এর আগে ৮ সেপ্টেম্বর তিনজন, আর ২ সেপ্টেম্বর ৩৬ নম্বর সাক্ষী হিসেবে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি আসামি থেকে রাজসাক্ষী হয়ে জানিয়েছেন যে, শেখ হাসিনা ও কামালের নির্দেশে জুলাই-আগস্টে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে এবং ক্ষমা চেয়েছেন। এছাড়া অজানা তথ্যও ট্রাইব্যুনালের সামনে উপস্থাপন করেছেন।
সাক্ষীদের জবানবন্দিতে গত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় দেশজুড়ে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞের বীভৎস বর্ণনা উঠে এসেছে। শহীদ পরিবারের সদস্য ও প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
ট্রাইব্যুনাল গত ১০ জুলাই মামলায় শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করার নির্দেশ দেন। প্রসিকিউশন তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ দায়ের করেছে। আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র মোট ৮,৭৪৭ পৃষ্ঠার, যার মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠা, জব্দ তালিকা ও দালিলিক প্রমাণ চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠা এবং শহীদদের তালিকা দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠা। এ পর্যন্ত ৮১ জন সাক্ষী ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছেন। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়।