জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য দিচ্ছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন প্যানেলে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন মিজানুল ইসলাম ও গাজী এমএইচ তামিম।
এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত নাহিদের সাক্ষ্যগ্রহণ চলে। কিন্তু তা শেষ না হওয়ায় কার্যক্রম বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। এদিন ট্রাইব্যুনাল শুরু হতেই নাহিদের অবশিষ্ট সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। এরপর তাকে জেরা করবেন আসামি শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন।
এছাড়া বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রমে দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে দ্বিতীয় দিনের মতো জেরা করেন স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী। এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ এখন ১৮তম দিনে গড়িয়েছে, যেখানে মোট ৪৭ জন সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।
গত ১৫ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাহমুদুর রহমানের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা অনুষ্ঠিত হয়। তবে প্রসিকিউশনের প্রধান মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, নাহিদের জবানবন্দি শেষ হলেই এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ ঘোষণা করা হবে।
এর আগে, গত ২ সেপ্টেম্বর ৩৬তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন মামলার আসামি থেকে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তার জেরা শেষ হয় ৪ সেপ্টেম্বর। তিনি ট্রাইব্যুনালে জানান, গত বছরের জুলাই-আগস্টে শেখ হাসিনা ও কামালের নির্দেশে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। এজন্য তিনি ক্ষমা চান এবং নতুন অনেক তথ্য উপস্থাপন করেন।
সাক্ষীদের জবানবন্দিতে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় সারা দেশে হত্যাযজ্ঞের ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। শহীদ পরিবারের সদস্য ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরা শেখ হাসিনা, কামালসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে এ মামলার বিচার শুরুর আদেশ দেন। পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয় তাদের বিরুদ্ধে। অভিযোগের নথি মোট ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার, যার মধ্যে ২ হাজার ১৮ পৃষ্ঠা তথ্যসূত্র, ৪ হাজার ৫ পৃষ্ঠা জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণ, আর ২ হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠা শহীদদের তালিকা। মামলায় সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন ৮১ জন। গত ১২ মে তদন্ত সংস্থা তাদের প্রতিবেদন দাখিল করে।