ভারতীয় শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন শিখস ফর জাস্টিস (এসএফজে)-এর কানাডা শাখা দেশটির ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার ভ্যানকুভারে অবস্থিত ভারতীয় কনস্যুলেট দপ্তর দখলের হুমকি দিয়েছে। গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে এই হুমকি জানানো হয়।
একই সঙ্গে সংগঠনটি কানাডায় ভারতের নতুন রাষ্ট্রদূত দিনীশ পাটনায়েকের ছবি সম্বলিত একটি পোস্টার প্রকাশ করে, যেখানে তার মুখে লাল রঙের টার্গেট চিহ্ন আঁকা হয়েছে।
এসএফজের অভিযোগ, কানাডায় ভারতীয় কনস্যুলেটগুলো গুপ্তচর নেটওয়ার্ক পরিচালনা করছে এবং খালিস্তানপন্থি নেতা ও সংগঠকদের নজরদারিতে রেখেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, “২০২৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে ভারতীয় এজেন্টদের সম্পৃক্ততা রয়েছে এবং এ নিয়ে তদন্ত চলছে। কিন্তু দুই বছর পরও কনস্যুলেটগুলো গুপ্তচরবৃত্তি বন্ধ করেনি।”
সংগঠনটি আরও দাবি করে, ভারতীয় কনস্যুলেটের হুমকি এতটাই গভীর যে রয়্যাল কানাডিয়ান পুলিশ সম্প্রতি এসএফজের শীর্ষ সংগঠক ইন্দ্রজিৎ সিং ঘোসালকে বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়ার প্রস্তাব করেছে।
তাদের ঘোষণা, “আমরা ভারতের কনস্যুলেট দখল করব এবং গুপ্তচর নেটওয়ার্ক চালানোর জন্য নয়াদিল্লির কাছে জবাব চাইব।”
প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার পর থেকেই ভারতের একাংশ শিখ সম্প্রদায় পৃথক রাষ্ট্র ‘খালিস্তান’-এর দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। আশির দশকে ভারতের ভেতরে আন্দোলন দমন করা হলেও যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইউরোপে বসবাসরত শিখরা এ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
হরদীপ সিং নিজ্জর, যিনি কানাডায় খালিস্তানপন্থি নেতা ও সংগঠক হিসেবে পরিচিত ছিলেন, ২০২৩ সালের ১৮ জুন ভ্যানকুভারের সারেতে একটি গুরুদুয়ারার সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। তার হত্যার জন্য কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সরাসরি ভারতকে দায়ী করেছিলেন। এ অভিযোগ অস্বীকার করে নয়াদিল্লি, যার ফলে দুই দেশের সম্পর্ক তীব্র সংকটে পড়ে।
যদিও চলতি বছরের মার্চে ক্ষমতায় আসার পর কানাডার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি ধীরে ধীরে সম্পর্ক উন্নতির চেষ্টা করছেন, এর মধ্যেই এসএফজের পক্ষ থেকে নতুন করে এ হুমকি দেওয়া হলো।
নিজ্জর নিহত হওয়ার পর থেকে এসএফজের কানাডা শাখার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইন্দ্রজিৎ সিং ঘোসাল।