কুমিল্লার হোমনা উপজেলায় ফেসবুকে ধর্ম নিয়ে কটূক্তির জেরে চারটি মাজারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আসাদপুর ইউনিয়নের আসাদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার সকাল ১০টা ৫২ মিনিটে ‘বেমজা মহসিন’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে এক যুবক ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন। বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী মহসিনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে থানার সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে। পরে সেনা ও পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি শান্ত করে। ওই দিনই যুবকটিকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং সন্ধ্যায় ইসলামী যুবসেনার এক নেতা বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। আজ সকালে আদালতে সোপর্দ করা হয় তাকে।
তবে এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ জনতা বৃহস্পতিবার সকালে মাইকে ঘোষণা দিয়ে আসাদপুর গ্রামে কফিল উদ্দিন শাহ ও হাওয়ালি শাহ মাজারে অগ্নিসংযোগ এবং কালাই শাহ ও আবদু শাহ মাজারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। পরে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পর কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. নাজির আহমেদ খান ও হোমনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ক্ষেমালিকা চাকমা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ইউএনও ক্ষেমালিকা চাকমা জানান, বুধবারের কটূক্তির কারণে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তার ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার মাজারে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ইসলামী ফ্রন্ট ও যুব সেনার নেতারা জানান, অভিযুক্ত যুবক দীর্ঘদিন ধরে উসকানিমূলক পোস্ট দিচ্ছিলেন। তারা তার ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন।
হোমনা থানার ওসি মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তবুও সকালে বিক্ষুব্ধ জনতা মাজারে হামলা চালায়।
এ বিষয়ে কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. নাজির আহমেদ খান বলেন, আপত্তিকর পোস্ট দেওয়ার পর পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে যারা মাজারে হামলা চালিয়েছে, তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।