রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নিজেকে ‘ইমাম মাহাদী’ দাবি করা নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবার শরীফে হামলা এবং কবর থেকে মরদেহ তুলে পোড়ানোর ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও রাজবাড়ী জেলা জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট মো. নুরুল ইসলাম।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ ঘটনার নিন্দা জানান এবং এটিকে ন্যক্কারজনক ও অমানবিক বলে উল্লেখ করেন।
স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, “গত বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সর্বদলীয় ও সর্বমহলের ইমান আকিদাহ সংরক্ষণ কমিটির পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে বৈঠক হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, শুক্রবার বাদ জুমা গোয়ালন্দে শুধু সমাবেশ হবে, কোনো মিছিল হবে না। এ তথ্য উপজেলা ইমাম কমিটির সভাপতিকেও জানানো হয়।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, শুক্রবার দুপুরে তিনি নিজে নুরাল পাগলার বাড়ি পরিদর্শন করেন এবং তখন সেখানে মরদেহ নামানোর কার্যক্রম দেখেন। উপস্থিত সাংবাদিকরা যখন তাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করেন, তখন তিনি জানান, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মিছিল হওয়ার কথা নয়, কেবল সমাবেশ হবে। স্থানীয় কয়েকজনকে তিনি এই সিদ্ধান্তের কথা জানান, তারা পরে আলোচনা করে তাকে জানাবেন বলে আশ্বস্ত করেন। কিন্তু সেখানে মিছিল হয়েছে—এ তথ্য তার জানা ছিল না। তার সব বক্তব্য গণমাধ্যমে ও লাইভে প্রকাশিত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
স্ট্যাটাসে জেলা জামায়াত আমির আরও বলেন, “আমি এ ঘটনায় অত্যন্ত মর্মাহত। মরদেহ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে ফেলা বা বাড়িঘরে লুটপাট করা সম্পূর্ণ অন্যায় ও অমানবিক কাজ। আমার জীবনে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা কখনো শুনিনি বা দেখিনি। এ ঘটনার সঙ্গে আমাকে জড়ানোর চেষ্টা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”
উল্লেখ্য, শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজের কিছু সময় পর রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে বিক্ষুব্ধ জনতা সম্প্রতি মারা যাওয়া নুরাল পাগলার দরবারে হামলা চালায়। তারা অভিযোগ তোলে যে শরিয়ত পরিপন্থি পদ্ধতিতে তার দাফন করা হয়েছে। এ সময় কবর থেকে মরদেহ তুলে সেটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে দরবার শরীফে লুটপাট চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়। সহিংস ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হন এবং রাসেল মোল্লা নামে এক যুবক নিহত হন।