রাজবাড়ীতে নিজেকে ‘ইমাম মাহদি’ দাবি করা নুরুল হক বা নুরাল পাগলের দরবারে হামলা, অগ্নিসংযোগ এবং কবর থেকে মরদেহ তুলে পোড়ানোর ঘটনায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। এনসিপি মনে করছে, এই ঘটনায় সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ব্যর্থতা এবং প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বহীনতা স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এ নিন্দা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ‘ঈমান-আকিদা রক্ষা কমিটি’-এর ব্যানারে আয়োজিত সমাবেশ থেকে কিছু লোক মাজারের দিকে অগ্রসর হন। পরে তারা মাজার ভাঙচুর করে এবং কবর থেকে মরদেহ তুলে পোড়ানোর মতো নৃশংস ঘটনা ঘটান।
এনসিপি অভিযোগ করেছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় নেতা এবং আলেম সমাজ মিলে এই ‘ঈমান-আকিদা রক্ষা কমিটি’ গঠন করেছে। কমিটি গত মঙ্গলবার নুরুল হককে শরীয়ত পরিপন্থি কায়দায় পবিত্র কাবা শরিফের আদলে কালো রঙের ঘরে কবরস্থ করা হয়, যা ধর্ম অবমাননার অভিযোগে বিক্ষোভের সূত্রপাত হিসেবে কাজ করে। প্রশাসন তিন দিনেও বিষয়টি সঠিকভাবে সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, প্রশাসনের এই ব্যর্থতা এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্বহীনতা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এই ধরনের বর্বর ঘটনা শুধু ফৌজদারি অপরাধ নয়, বরং ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের পরিপন্থী। এনসিপি চায়, এই মব-সন্ত্রাসের বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হোক এবং জড়িত প্রত্যেক ব্যক্তিকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।
এনসিপি আরও সতর্ক করেছে, বিগত কিছুদিন ধরে একটি গোষ্ঠী বিভিন্নভাবে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। মাজার ও দরবার ভাঙচুর, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, তেজগাঁওয়ে মিছিল — সবকিছুই এ অস্থিরতার ধারাবাহিকতা। তারা আশা করছে, অন্তর্বর্তী সরকার এই ধরনের ঘটনার সরাসরি ও পরোক্ষ উত্স খুঁজে বের করবে। এনসিপি নাগরিকদের সতর্ক ও সজাগ থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছে।