Saturday, September 6, 2025
spot_imgspot_img
Homeধর্ম - ইসলামরাসুল (সা.)-এর জীবনদর্শনে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের অন্তর্দৃষ্টি

রাসুল (সা.)-এর জীবনদর্শনে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের অন্তর্দৃষ্টি

বিজ্ঞান যতই অগ্রসর হচ্ছে, নতুন গবেষণায় প্রমাণিত হচ্ছে যে, রাসুল (সা.)-এর জীবনাচরণে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের বহু নীতির ভিত্তি নিহিত আছে। নিচে কিছু বিষয় সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো—

খাদ্যাভ্যাস: রাসুল (সা.) বলেছেন, মানুষ যেন পাকস্থলীর পরিমাণ বেশি না ভরায়। তিন ভাগের মধ্যে এক ভাগ খাবার, এক ভাগ পানি এবং এক ভাগ বাতাস যথেষ্ট। আধুনিক গবেষণায় দেখা গেছে, সীমিত পরিমাণে খাবার গ্রহণ করলে কিছু রোগের ঝুঁকি কমে। এছাড়া রাসুল (সা.) দিনে দুই বেলা খাবার গ্রহণ করতেন; গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, দিনে দুবার খাওয়াই তিনবার খাওয়ার তুলনায় স্বাস্থ্যসম্মত।

রোজা: তিনি নিয়মিত রোজা রাখতেন। গবেষণায় দেখা গেছে, রোজা রাখার ফলে রক্তচাপ কমে, রক্তে চর্বি ও গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রিত হয়, এবং কোষের অস্বাভাবিক উপাদান Autophagy প্রক্রিয়ায় ধ্বংস হয়। ২০১৬ সালে এই আবিষ্কারের জন্য নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

ঘুম: রাসুল (সা.) মাগরিবের পর বা খাবারের আগে ঘুমাতেন, আবার তাহাজ্জুতের জন্য রাতের মধ্যভাগে উঠতেন। অপরাহ্ণে হালকা ঘুম (কায়লুল্লাহ) করতেন। গবেষণায় দেখা গেছে, পাঁচ-সাত ঘণ্টা ঘুম এবং রাতের খাবার খাওয়ার দুই ঘণ্টা আগে ঘুমাতে যাওয়ার অভ্যাস হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা: রাসুল (সা.) নিয়মিত অজু ও গোসল করতেন এবং অন্যদেরও উৎসাহিত করতেন। এটি বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। মধ্যযুগে ইউরোপে অপরিষ্কার থাকার কারণে প্লেগের মতো মহামারী ছড়াত।

স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা: তিনি বলেছেন, “আল্লাহ কোনো রোগ সৃষ্টি করেননি, যার চিকিৎসা নেই।” রোগীকে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিতেন। তার জীবনদর্শনের কারণে পরবর্তীতে চিকিৎসা বিজ্ঞান দ্রুত বিকাশ লাভ করেছে।

হাস্যকৌতুক ও মানসিক সুস্থতা: হাসি-খুশি রাখা স্ট্রেস কমায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং জীবন দীর্ঘায়িত করে। মানসিক প্রশান্তির জন্য ঈমান, ধৈর্য, আল্লাহর ওপর ভরসা ও পরকালকে সাফল্যের মাপকাঠি হিসেবে দেখা শিখিয়েছেন।

ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ: তিনি বলেছেন, সত্যিকারের বীরত্ব হলো ক্রোধ ও রাগ নিয়ন্ত্রণে রাখা। গবেষণায় দেখা গেছে, ক্রোধের দুই ঘণ্টার মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি পাঁচগুণ বেড়ে যায়।

সামাজিক কল্যাণ: দরিদ্র ও বিধবাদের সাহায্য করা স্বাস্থ্যকর সমাজের অংশ। গবেষণায় দেখা গেছে, চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে না পারায় বাংলাদেশে প্রতিবছর ৩০-৪০ লাখ মানুষ দারিদ্র্যের সীমার নিচে চলে যায়।

খাদ্যে ভেজাল ও সততা: রাসুল (সা.) সততার গুরুত্ব এবং ভেজালমুক্ত খাদ্য গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। বর্তমান বাংলাদেশে অনেক খাবারে কেমিক্যাল মেশানো হয়, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়।

সারসংক্ষেপে বলা যায়, রাসুল (সা.)-এর জীবনাচরণ আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের নানা নীতিকে পূর্বাভাস দিয়েছে, যা আজকের যুগেও স্বাস্থ্যসংক্রান্ত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষার উৎস।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments