চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্টকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের জের ধরে হাটহাজারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু কাওসার মাহমুদকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে পরিদর্শক (তদন্ত) মোস্তাক আহম্মেদকে নতুন ওসি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী তারেক আজিজ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বিকেলে দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী বড় মাদরাসার শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ওসির নিষ্ক্রিয় ভূমিকার অভিযোগ এনে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ সংবাদ সম্মেলন করে। এ সময় ওসিকে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। একই দাবিতে মাদরাসার শিক্ষার্থীরা রাতে বিক্ষোভও করে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে হাটহাজারী মাদরাসার সামনে আরিয়ান ইব্রাহিম নামের এক যুবক আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি করে ফেসবুকে পোস্ট দেন। এতে কওমি মহলে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরে সন্ধ্যায় ফটিকছড়ি থানা পুলিশ পৌর সদর থেকে আরিয়ানকে আটক করে। তিনি পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মুহাম্মদ মুছার ছেলে। আটকের পর তিনি ভিডিও বার্তায় দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিকেল থেকে হাটহাজারী পৌর এলাকায় বিক্ষোভ শুরু হয়। গোল চত্বরে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করার সময় মাদরাসার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সুন্নি মতাদর্শীদের সংঘর্ষ বাধে। এতে শতাধিক মানুষ আহত হন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শনিবার রাতেই উপজেলা প্রশাসন হাটহাজারী এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে। এ আদেশে মীরের হাট থেকে এগারো মাইল সাবস্টেশন পর্যন্ত এবং উপজেলা গেইট থেকে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট পর্যন্ত এলাকায় রোববার বিকেল ৩টা পর্যন্ত সব ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়।
পরদিন রবিবার হাটহাজারী উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে প্রশাসনের উদ্যোগে সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সংঘর্ষে জড়িত দুই পক্ষের প্রতিনিধি ১০ জন করে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আহতদের চিকিৎসা এবং ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস প্রদান করে প্রশাসন।