দুর্নীতি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে নেপালে তরুণদের আন্দোলন রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। ইতোমধ্যে সহিংসতায় অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন এবং প্রশাসন একাধিক স্থানে কারফিউ জারি করেছে।
এমন পরিস্থিতিতেও মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে তরুণরা রাস্তায় নামতে শুরু করেছেন। নেপালি গণমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট জানায়, সকাল থেকেই নতুন বানেশ্বরের পার্লামেন্ট ভবনের সামনে তরুণরা জড়ো হচ্ছেন। তাদের হাতে কোনো ব্যানার বা প্ল্যাকার্ড নেই। সেখানে এক তরুণ বলেন, “গতকালের ঘটনাই প্রমাণ করেছে সরকার ব্যর্থ। তাই আমি আজ তরুণদের পাশে দাঁড়াতে এসেছি।”
এর আগের দিন সোমবার ‘জেনারেশন জি’-এর ডাকে হওয়া বিক্ষোভে প্রাণ হারান ১৯ জন। সরকারের দমননীতি নিয়ে সমালোচনা করেছেন ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধীদলীয় নেতারা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সকাল ৮টা ৩০ মিনিট থেকে কাঠমান্ডুর রিং রোড এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়। পাশাপাশি ললিতপুর জেলাতেও কারফিউ ঘোষণা করা হয়।
কাঠমান্ডু ছাড়াও দেশব্যাপী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। দামাক, বীরাটমোড়, ইটাহারি, বীরাটনগর, জনকপুর, ভরতপুর, পোখারা, বীরগঞ্জ, বুটওয়াল, ভৈরহাওয়া, তুলসিপুর ও ধানগড়িসহ বিভিন্ন শহরে বড় বিক্ষোভ হয়। অনেক জায়গায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ বাধে।
সুনসারির ইটাহারিতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ গুলি চালায়, এতে দুইজন নিহত ও একজন আহত হন। বিক্ষোভকারীরা কার্যালয় ভাঙচুর করলে দুপুর সাড়ে ৩টা থেকে কারফিউ জারি হয়।
ঝাপার বীরাটমোড় ও দামাকে সংঘর্ষে এক ডজনের বেশি মানুষ আহত হন। বিক্ষোভকারীরা বীরাটমোড় পুলিশ পোস্টে আগুন ধরিয়ে দেন এবং দামাকে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলির বাড়িতে ইটপাটকেল ছোড়ে। পরে রাত সাড়ে ৮টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়।
এছাড়া পোখারায় কাস্কি জেলা প্রশাসন দুপুর ২টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করে। প্রশাসনিক এলাকায় পাঁচজনের বেশি মানুষের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়। সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট ও পানিকামান ব্যবহার করে। এতে দুই বিক্ষোভকারী গুলিবিদ্ধ হন।
নেপালি সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, প্রথমে মূলত কলেজ পড়ুয়া তরুণরা আন্দোলনে নামলেও পরে সাধারণ মানুষও এতে যোগ দেন। ফলে আন্দোলন দ্রুত দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।