পটুয়াখালী জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি কাজী কানিজ সুলতানা হেলেনের লুকিয়ে রাখা ছয় শতাধিক সরকারি কম্বল নিয়ে পটুয়াখালী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব আসিফ ইকবাল মাহমুদ অনিক (বাবু) যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনা ৮ ফেব্রুয়ারি, শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পটুয়াখালী শহরের সবুজ বাগ ৮ নম্বর লেনে জেলা প্রশাসন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্রতিনিধিদের এক বিশেষ অভিযানের সময় উঠে আসে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ৫ আগস্টের পর সাবেক এমপি কাজী কানিজ সুলতানা হেলেন তার প্রতিবেশী ব্যাংক কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের বাসার চার তলায় একটি খোলা রুমে বেশ কিছু সরকারি কম্বল রেখে যান। ৬ আগস্ট থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সেই কম্বলগুলো ব্যাংক কর্মকর্তার হেফাজতে ছিল। তবে, ৮ ফেব্রুয়ারি ভোরে ছাত্রদলের সদস্য সচিব আসিফ ইকবাল মাহমুদ অনিক এবং তার সহযোগীরা কম্বলগুলো নিয়ে যান।
ব্যাংক কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “সাবেক এমপি হেলেন ৬ আগস্ট বাসা ছাড়ার সময় কয়েকটি বস্তা সরকারি কম্বল এবং কিছু খেলাধুলার সামগ্রী রেখে যান। সেগুলো আমার বাসার চার তলার একটি খোলা রুমে রাখা ছিল, কিন্তু হঠাৎ করেই ছাত্রদলের অনিক এগুলো নিয়ে গেছে।” তিনি আরও বলেন, “এটা আমার উচিত ছিল প্রশাসনকে জানানো, কিন্তু ওই সময় আমি বিষয়টি জানাইনি।”
অপরদিকে, অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা আসিফ ইকবাল মাহমুদ অনিক (বাবু) ঘটনার সাথে নিজের কোনো সম্পর্ক অস্বীকার করে বলেন, “আমি সেখানে যাইনি, তবে শুনেছি সেখানে কম্বল নিয়ে কিছু ঘটেছে।” তিনি আরও বলেন, “ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে, আমি শুধু সেখানে গিয়েছিলাম এবং কথা বলেই চলে এসেছি।”
এই ঘটনায় সাবেক এমপি কাজী কানিজ সুলতানা হেলেন ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে দাবি করেন, “তিনি ২০১৯-২০২৩ মেয়াদে পটুয়াখালী জেলার শীতার্তদের মাঝে সরকারি কম্বলসহ নিজের কেনা কম্বল বিতরণ করতেন। ২০২৪ সালে তিনি ১২০ পিস কম্বল কিনে স্থানীয় গরীবদের মাঝে বিতরণের জন্য রাখেন, কিন্তু অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির কারণে বিতরণ করা সম্ভব হয়নি।”
এদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতারা অভিযোগ করেছেন, “ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে নেতারা ব্যাপক লুটপাট করেছে, যা প্রমাণ হিসেবে এই ঘটনার মধ্যে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।”
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চন্দন কর জানান, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়, কিন্তু কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। তবে নিয়মিত মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে এবং তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।