বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বিদেশে পাচার হওয়া হাজার হাজার কোটি টাকা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে যুক্তরাজ্যে সাবেক সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিকের অবৈধ সম্পত্তি জব্দ করার বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে। টিউলিপ সিদ্দিক, যিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি এবং লন্ডনে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি বাংলাদেশ থেকে পাচার করা অর্থ দিয়ে অবৈধভাবে সম্পত্তি কিনেছেন। বাংলাদেশের কর্মকর্তারা দাবি করছেন, তার লন্ডনের ফ্ল্যাট এবং অন্যান্য সম্পত্তি আসলে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থে কেনা হয়েছে।
বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এই অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে, পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) ও এই তদন্তে যুক্ত হয়েছে। ২০১৬ সালে টিউলিপ সিদ্দিকের পার্লামেন্ট সদস্য হওয়ার পর, তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে, বিশেষত রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের সাথে যুক্ত অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩.৯ বিলিয়ন পাউন্ডের অবৈধ অর্থ সিদ্দিক এবং তার পরিবারের সদস্যরা পাচার করেছেন এবং সেই অর্থ দিয়ে লন্ডনে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কেনা হয়েছে। টিউলিপ সিদ্দিকের মালিকানাধীন ৭ লাখ পাউন্ড মূল্যের ফ্ল্যাটসহ আরও কিছু সম্পত্তি এর মধ্যে রয়েছে।
এছাড়া, তার বিরুদ্ধে আরও একটি অভিযোগ উঠেছে যে, আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট এক ব্যবসায়ী তাকে একটি ফ্ল্যাট উপহার হিসেবে দিয়েছেন, কিন্তু ওই ফ্ল্যাটও আসলে পাচার করা অর্থ দিয়ে কেনা হয়েছে। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন এবং অন্যান্য সংস্থা এই ব্যাপারে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং লন্ডনে তার বিরুদ্ধে সম্পত্তি জব্দ করার কার্যক্রম শুরু করেছে।
এদিকে, টিউলিপ সিদ্দিক গত বছর যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং বর্তমানে তিনি সম্পত্তি সম্পর্কিত নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগ থাকলেও, তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন মনে করছে, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প থেকে উল্লিখিত অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে লন্ডনে এই বিলাসবহুল সম্পত্তি কেনা হয়েছে এবং তাদের তদন্ত চলছে।
এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার জন্য বিভিন্ন দেশ এবং সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখা হয়েছে, যাতে টিউলিপ সিদ্দিকের অবৈধ সম্পত্তি সুরক্ষিত করা যায় এবং ভবিষ্যতে এমন কার্যকলাপ রোধ করা সম্ভব হয়।