কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এবার সার আমদানিতে সরকারের বিপুল অর্থ সাশ্রয় হয়েছে এবং অযৌক্তিক মুনাফার সুযোগ বন্ধ হয়েছে। আগে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় সর্বনিম্ন দরদাতার পাশাপাশি দ্বিতীয় ও তৃতীয় দরদাতাকেও চুক্তি দেওয়া হতো, যার ফলে সরকারের কোটি কোটি টাকা ও বৈদেশিক মুদ্রা অপচয় হতো। এখন কেবল সর্বনিম্ন দরদাতাকে কার্যাদেশ দেওয়ায় এই ধরনের অপচয় বন্ধ হয়েছে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সরকারের স্বচ্ছ ও কঠোর পদক্ষেপের কারণে অতিরিক্ত মূল্যে সার বিক্রির সুযোগ আর নেই। এর ফলে কিছু মহল ক্ষুব্ধ হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কিছু গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে।
আগের নিয়মে একাধিক প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়ায় টনপ্রতি ২০ থেকে ১৫০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত বেশি দামে সার কিনতে হতো। বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এ প্রক্রিয়া পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন কেবল সর্বনিম্ন দরদাতাকে কার্যাদেশ দেওয়া হচ্ছে। চলতি অর্থবছরে ১৩টি প্রতিষ্ঠানকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি, ২ লাখ ৫৫ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি এবং ৯০ হাজার মেট্রিক টন এমওপি সরবরাহের কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। পরে আরও ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে একই মূল্যে অতিরিক্ত ৯০ হাজার টন টিএসপি ও ১ লাখ ২০ হাজার টন ডিএপি আমদানির কার্যাদেশ দেওয়া হয়।
মন্ত্রণালয় বলছে, কার্যাদেশ যাচাই করলে দেখা যাবে, কোনো দেশের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সারের জন্য সব প্রতিষ্ঠানকে একই দরে সরবরাহের আদেশ দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বুলেটিন—আরগুস ও ফার্টিকন—এ প্রকাশিত দরের ভিত্তিতে সার আমদানির মূল্য নির্ধারণ করা হয়। একই দেশের জন্য কোনো প্রতিষ্ঠানকে ভিন্ন মূল্যে চুক্তি দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন।
তবে জাহাজ ভাড়া, ডিসচার্জ খরচ ও স্থানীয় পরিবহন খরচের কারণে দেশের ভেদে সামান্য দামের পার্থক্য থাকতে পারে, যা আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী স্বাভাবিক। রাষ্ট্রীয় চুক্তি (জি-টু-জি) অনুসারে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) দীর্ঘদিন ধরে একই নিয়মে সার আমদানি করছে।
মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, বর্তমান সরকার জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা ও মূল্যবোধ অনুযায়ী বৈষম্যহীন ও দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। কৃষি খাতে গত এক বছরে শাকসবজি, আলু, পেঁয়াজ, ধান ও আমসহ নানা ফসলের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও নিরবচ্ছিন্ন সার সরবরাহ নিশ্চিত হওয়ায় এই সাফল্য সম্ভব হয়েছে। সরকারের লক্ষ্য কৃষি ও কৃষককে সমর্থন দিয়ে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।