নেপালের কাঠমান্ডু উপত্যকা এবং দেশের অন্যান্য অংশ থেকে কারফিউ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এতে বিক্ষোভ, সহিংসতা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অবসান ঘটছে এবং ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে দেশের জনজীবন। শনিবার দেশটিতে কারফিউ তুলে নেওয়া হয়েছে।
দ্য হিমালয়ান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত শুক্রবার রাত ৯টার দিকে প্রেসিডেন্টের বাসভবন শীতল নিবাসে সুশীলা কারকি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন। শপথ বাক্য পাঠ করান প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাওদেল। দায়িত্ব গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে সুশীলা পার্লামেন্ট ভেঙে দেন এবং পরবর্তী নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়—২০২৬ সালের ৫ মার্চ।
গত সপ্তাহে নিবন্ধনহীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং দুর্নীতির সংস্কৃতি বন্ধের দাবিতে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে নেপালে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলন চলাকালে নিরাপত্তাবাহিনী গুলি চালায়, এতে অনেকজন হতাহত হন এবং বিক্ষোভ ভয়াবহ রূপ নেয়। পরিস্থিতি সংকটজনক হয়ে ওঠে। আহত ও নিহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়; নিহতদের মধ্যে নেপালের তিন পুলিশ সদস্য, ২১ বিক্ষোভকারী, অন্যান্য ১৮ জন এবং ৯ জন বন্দি রয়েছেন।
কেপি শর্মা ওলির প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের পর কয়েকদিন ধরে চলা রাজনৈতিক অস্থিরতা আপাতত শেষ হয়েছে। নেপালি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছেন, শনিবার থেকে কোনো কারফিউ বা চলাফেরায় বিধিনিষেধ নেই। দোকানপাট, সবজি বাজার ও শপিং মল খুলে গেছে এবং রাস্তায় গাড়ির চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে। দূরপাল্লার গাড়িও পুনরায় চলাচল শুরু করেছে।
একাধিক সরকারি ভবনসহ বিভিন্ন এলাকায় পরিচ্ছন্নতা অভিযান চলছে। সাম্প্রতিক সহিংস বিক্ষোভে আগুনে বেশিরভাগ সরকারি ভবন ধ্বংস হয়েছে। সহিংসতার সময় প্রায় ১৩,৫০০ বন্দি কারাগার থেকে পালিয়ে গেছেন, যার মধ্যে এক হাজার জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও বাকি এখনও অধরা।
সুশীলার শপথের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। আগামী ২০২৬ সালের ৫ মার্চ নেপালে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের প্রেস উপদেষ্টা কিরন পোখারেল।