জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে আসায় মাঠ প্রশাসনে বড় পরিবর্তনের পথে হাঁটছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ স্তর জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদে ইতিমধ্যেই ছয় জেলায় বদল বা নতুন নিয়োগ হয়েছে। এছাড়া আরও কিছু জেলায় পরিবর্তন আনার প্রক্রিয়া চলছে।
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে ইতিমধ্যে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছে, আর কমিশনও নির্বাচন আয়োজনের কাজ এগিয়ে নিচ্ছে।
নির্বাচনের সময় ডিসিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন, বিশেষ করে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকেন। তবে এবার তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হবে কি না, তা নির্বাচন কমিশন এখনও চূড়ান্ত করেনি। তারপরও, সরকার যোগ্য কর্মকর্তাদের নিয়োগ দিয়ে মাঠ প্রশাসনের প্রস্তুতি শক্তিশালী করছে।
ইতিমধ্যে ৬ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ বা বদলি করা হয়েছে। এসব জেলা হলো: পটুয়াখালী, কুষ্টিয়া, কুড়িগ্রাম, মেহেরপুর, নেত্রকোণা ও খুলনা। এর মধ্যে তিনজনকে নতুন ডিসি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং তিনজনকে বদলি করা হয়েছে।
নতুন ডিসি নিয়োগ পেয়েছেন:
- ড. মোহাম্মদ শহীদ হোসেন চৌধুরী – পটুয়াখালী
- ড. মোহাম্মদ আবদুল ছালাম – মেহেরপুর
- মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান – নেত্রকোণা
বদলি হয়েছেন:
- আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন – কুষ্টিয়া
- মো. তৌফিকুর রহমান – খুলনা
- সিফাত মেহনাজ – কুড়িগ্রাম
বর্তমানে ডিসি পদে দায়িত্ব পালন করছেন ২৪তম, ২৫তম ও ২৭তম বিসিএসের কর্মকর্তারা। ২৪তম বিসিএসের কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করে নতুন ডিসি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ২৭তম ও ২৮তম বিসিএসের কর্মকর্তাদের মধ্য থেকেও ডিসি নিয়োগ দেওয়া হবে।
নতুন ডিসি নিয়োগের জন্য ফিটলিস্ট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান জানান, কিছু নতুন ডিসি ইতিমধ্যেই পদায়ন করা হয়েছে এবং আগামী সময়ে আরও নিয়োগ হবে।
তিনি বলেন, ডিসি নিয়োগের ক্ষেত্রে সাত সদস্যের জনপ্রশাসন কমিটি ও পাঁচ সদস্যের ডিসি সিলেকশন কমিটি দায়িত্ব পালন করে। ফিটলিস্ট প্রস্তুতির পর প্রধান উপদেষ্টা অনুমোদন দেন, এরপর জনপ্রশাসন প্রজ্ঞাপন জারি করে নিয়োগ নিশ্চিত করে।
ডিসিসহ মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্বাচনের সময় কোনো ব্যক্তি বা দলের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তারা তফসিল ঘোষণার পর নির্দিষ্ট নির্দেশনার বাইরে কোনো কাজ করতে পারবেন না।