ময়মনসিংহ নগরীতে ফেসবুকে দেওয়া ‘টু-লেট’ বিজ্ঞাপন দেখে বাসা দেখতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন এক কলেজছাত্র। এ ঘটনায় থানায় মামলা হওয়ার পর পুলিশ দুই তরুণীকে গ্রেপ্তার করেছে। সোমবার পুলিশ তাদের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে।
তবে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, প্রতারণার শিকার ওই ছাত্রও আগে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস চক্রের সদস্য হিসেবে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
ঘটনাটি ঘটে নগরের গুলকিবাড়ী এলাকার ফখরুজ্জামান টাওয়ারের দ্বিতীয় তলায়। আনন্দ মোহন কলেজের গণিত বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র নাজমুল হাসান ওরফে নাঈম (২৩) সেখানে বাসা দেখতে গেলে চার তরুণী ও চার তরুণ মিলে অস্ত্রের মুখে তাকে জিম্মি করে মারধর করে এবং তার কাছ থেকে মোবাইল, ল্যাপটপ ও নগদ ২৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।
এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করার পর পুলিশ কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার দুই তরুণী—সাদিয়া জাহান ওরফে মেঘলা (২১) এবং ফারিয়া আক্তার ওরফে পায়েল (১৯)—কে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে মোবাইল ও ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে।
দুই তরুণীর গ্রেপ্তারের পর ফেসবুকে তাদের বিলাসবহুল জীবনযাপনের ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়, যা নিয়ে তোলপাড় চলছে।
এদিকে আলোচনায় আসে বাদী নাজমুল হাসানকেও ঘিরে। চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি ডিবি পুলিশ তাকে নগরের মীরবাড়ি এলাকার একটি ছাত্রাবাস থেকে গ্রেপ্তার করে। অভিযোগ ছিল, তিনি ভুয়া প্রশ্নপত্র সরবরাহের প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন।
তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মাহবুব আলম ফকির জানান, গ্রেপ্তার হওয়া দুই তরুণী আদালতে স্বীকারোক্তি না দিলেও পুলিশের কাছে জবানবন্দি দিয়েছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা মালামালও প্রমাণ হিসেবে রয়েছে। তিনি আরও জানান, চক্রের আরও কয়েকজন নারী ও পুরুষকে শনাক্ত করা হয়েছে, যাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, “বাদী নাজমুল হাসানও প্রশ্নফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত ছিল—এ বিষয়টি আমরা ফেসবুক থেকে জেনেছি। এখন তার ভূমিকা নিয়েও আলাদা তদন্ত হবে।”
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শিবিরুল ইসলাম জানান, প্রায় ২০ দিন আগে আরও একটি প্রতারক চক্র ধরা হয়েছিল, যারা নারী ফাঁদে ফেলে নগ্ন ভিডিও বানিয়ে জিম্মি করে টাকা আদায় করত। নতুন এই চক্রও একই কৌশলে প্রতারণা চালাত বলে ধারণা করা হচ্ছে।