তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের বিরুদ্ধে প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) দমন-পীড়নের অভিযোগে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু করেছে। রোববার রাজধানী আঙ্কারায় এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে লক্ষাধিক মানুষ।
বিক্ষোভের নেতৃত্বে আছে সিএইচপি, যেখানে আন্দোলনকারীরা এরদোয়ানকে ‘স্বৈরশাসক’ বলে উল্লেখ করে তার পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছেন। ২০২৩ সালে সিএইচপি একটি নতুন কমিটি গঠন করে এবং ওজগুর ওজেল দলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। কিন্তু সম্প্রতি তুরস্কের সাংবিধানিক আদালত সেই কমিটিকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। আদালতের রায় অনুযায়ী, নির্বাচনে কারচুপি এবং অবৈধ অর্থ লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে।
সিএইচপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা এই রায় আগেই অনুমান করছিলেন। রায় ঘোষণার দিন, রাজধানীর তান্দোয়ান স্কয়্যারে হাজার হাজার সমর্থক সমাবেশে উপস্থিত হন। সেখানে বক্তব্য দেন ওজগুর ওজেল। তিনি বলেন, “আদালত সরকারকে তুষ্ট করতে এই রায় দিয়েছে। তারা গণতন্ত্র চায় না, কারণ গণতান্ত্রিক পরিবেশে তারা হয়তো নির্বাচনে জিততে পারবে না। তারা ন্যায়বিচার চায় না, কারণ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হলে তাদের অপরাধ প্রকাশ পাবে।”
ওজেল এরদোয়ানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আজ হাজার হাজার মানুষ স্লোগান দিচ্ছে, ‘এরদোয়ানের পদত্যাগ চাই’। এরদোয়ান, আপনি কি আগে কখনও তান্দোয়ান স্কয়্যারে এমন দৃশ্য দেখেছেন?” তিনি আদালতের রায় প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন এবং বলেন, “মামলা ও রায় উভয়ই রাজনৈতিক। আমাদের সহযোদ্ধারা নিরপরাধ। আমরা আমাদের প্রতিবাদ অব্যাহত রাখব।”
তুরস্কে সংবিধান অনুসারে আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ২০২৮ সালে অনুষ্ঠিত হবে। তবে ওজেল বিক্ষোভে নির্বাচন এগিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিচার বিভাগ স্বাধীন এবং আদালতের রায়ে সরকার কোনো প্রভাব বিস্তার করেনি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ২০২৮ সালের নির্বাচনে নিজের জয় নিশ্চিত করতে এরদোয়ান সিএইচপিকে প্রধান বাধা হিসেবে দেখছেন।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত বছর থেকে এ পর্যন্ত সিএইচপির ৫০০ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার মধ্যে ১৭ জন মেয়র রয়েছেন। সিএইচপির জনপ্রিয় নেতা একরেম ইমামোগ্লু, ইস্তাম্বুলের প্রাক্তন মেয়র, ২০২৮ সালের নির্বাচনে এরদোয়ানের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছিলেন। কিন্তু ২০২৫ সালের ১৯ মার্চ দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসবাদ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
সাম্প্রতিক বিক্ষোভ সম্পর্কে ইমামোগ্লু আজ সোমবার লিখিত বার্তায় বলেছেন, “স্বৈরতন্ত্রের দিন শেষ। আমাদের সামনে নতুন দিন হাতছানি দিচ্ছে। একজনের আওয়াজ বন্ধ করা যায়, কিন্তু হাজারজনের আওয়াজ থামানো সম্ভব