বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) এক নেতা হানিট্র্যাপ চক্রের শিকার হয়েছেন। ভুক্তভোগী আশরাফ আলী হাওলাদার পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি।
ঘটনার সূত্রে জানা যায়, কুয়াকাটা পৌর এলাকার ২৪ বছর বয়সী ফারজানা বেগমের নেতৃত্বে এই প্রতারণার শিকার হন তিনি। এ ঘটনায় আশরাফ আলী হাওলাদার মির্জাগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় ফারজানা, রিমাসহ আরও ৪ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
পুলিশ জানায়, সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ভোরে এজাহারভুক্ত আসামি ফারজানাকে কুয়াকাটা শাহীন মাস্টারের ভাড়া বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ফারজানা মহীপুর থানার কুয়াকাটা ৯নং ওয়ার্ডের মৃত হাতেম দফাদারের মেয়ে এবং শাহিন হোসেনের স্ত্রী।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, দুটি মোবাইল নম্বর থেকে অপরিচিত নারী কণ্ঠে বারবার ফোন দিয়ে আশরাফ আলীকে উত্ত্যক্ত করা হতো। তিনি নিষেধ করলেও তা বন্ধ হয়নি। পরে গত ১০ সেপ্টেম্বর দুপুরে আশরাফ গ্রিন পার্ক থেকে মোটরসাইকেলে বাসায় ফেরার পথে কয়েকজন বোরকা পরা নারী তার পথরোধ করে। তারা নিজেদের কলেজ শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে শিক্ষা সফর ও শিক্ষাসামগ্রী কেনার অজুহাতে ৫ লাখ টাকা দাবি করে।
তিনি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে নারীরা হুমকি দেয়, তাকে বিবস্ত্র করার চেষ্টা করে এবং মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে। এরপর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে অশ্লীল ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করে। বাধ্য হয়ে আশরাফ আলী বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠান।
এরপর ১৩ সেপ্টেম্বর কপালভেড়া স্ট্রিল ব্রিজ এলাকায় আবারও ফারজানা ও তার সহযোগীরা তার পথ আটকায়। কেন চাহিদামতো টাকা দেওয়া হয়নি বলে তাকে বিবস্ত্র করার ভয় দেখিয়ে তাৎক্ষণিক এক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার ফারজানার কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া টাকার মধ্যে পাঁচ হাজার টাকা, একটি ইনফিনিক্স এক্স৬৮৮০ মডেলের মোবাইল, দুটি সিম কার্ড এবং প্রতারণার নানা প্রমাণ উদ্ধার করা হয়েছে।
মির্জাগঞ্জ থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম বলেন, হানিট্র্যাপ চক্র মূলত ধনী ও প্রবীণ ব্যক্তিদের টার্গেট করে প্রতারণা চালায়। এ গ্রুপের প্রধান ফারজানাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।