পল কাপুর, যিনি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে মনোনীত হয়েছেন, দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা এবং কৌশলগত বিষয়গুলোর একজন বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞ। তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত এবং দক্ষিণ এশিয়া, বিশেষত ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক নিয়ে তার বিশ্লেষণের জন্য পরিচিত। তার গবেষণা এবং বইগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘জিহাদ অ্যাজ গ্রান্ড স্ট্রাটেজি: ইসলামিস্ট মিলিট্যান্সি, ন্যাশনাল সিকিউরিটি, অ্যান্ড পাকিস্তানি স্টেট’, যেখানে তিনি পাকিস্তানের ইসলামি জঙ্গিবাদী রাজনীতির সমালোচনা করেছেন এবং বলেছেন, পাকিস্তান ভারত ও আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে এই কৌশলটি ব্যবহার করছে। তিনি আরও বলেছেন, পাকিস্তান রাষ্ট্রটি জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন করার মাধ্যমে ভারতে সরাসরি যুদ্ধের পরিবর্তে একটি সাশ্রয়ী কৌশল অবলম্বন করেছে, যা শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের জন্যই বিপজ্জনক হতে পারে।
কাপুর শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেছেন এবং তিনি স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের হুভার ইনস্টিটিউশনে ভিজিটিং ফেলো হিসেবে কাজ করেছেন। ২০২০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত তিনি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নীতি পরিকল্পনা স্টাফের সদস্য ছিলেন, যেখানে তিনি দক্ষিণ এশিয়া, ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল এবং যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্কের উন্নয়ন নিয়ে কাজ করেছেন। তার গবেষণার মাধ্যমে তিনি দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা, পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের গভীর বিশ্লেষণ করেছেন, যা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিষয়ক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
ভারতীয় গণমাধ্যমে পল কাপুরকে নিয়ে বিশেষ আগ্রহ দেখা যাচ্ছে, বিশেষত তার পাকিস্তান সম্পর্কিত সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে। তিনি মনে করেন, পাকিস্তান ভারতকে কৌশলগতভাবে মোকাবেলা করতে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন দেয়, যা একসময় পাকিস্তানের জন্য হুমকির কারণ হয়ে উঠতে পারে। কাপুর যুক্তরাষ্ট্র-ভারত কৌশলগত সম্পর্কের পক্ষে এবং চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলায় ভারতকে যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী অংশীদার হিসেবে দেখেন।
ভারতীয় বিশ্লেষকরা আশা করছেন যে, পল কাপুরের নিয়োগ পাকিস্তান সম্পর্কিত যুক্তরাষ্ট্রের নীতি আরও কঠোর এবং ভারতের প্রতি সমর্থন আরও দৃঢ় করবে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ভারতকেন্দ্রিক নীতির জোরদারে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারেন, যা চীনের বিরুদ্ধে কৌশলগত ভারসাম্য রক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তার নিয়োগ ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে।