গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি প্রধানত এককেন্দ্রিক ছিল, যা ভারতকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হয়েছিল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ভারতীয় স্বার্থ রক্ষা ও দেশটির সাথে বিভিন্ন সহযোগিতার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে বর্তমানে দেশের বহুমুখী পররাষ্ট্রনীতির প্রয়োজনীয়তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। একটি দেশের উপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা থেকে বেরিয়ে, বাংলাদেশকে তার নিজস্ব জাতীয় স্বার্থ অনুযায়ী বহির্বিশ্বে সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।
হাসিনা-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তনে কিছু চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে। এসব সমস্যার মোকাবিলা করতে হলে একটি শক্তিশালী, স্থিতিশীল নেতৃত্ব প্রয়োজন, যা দেশের নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক রক্ষা করতে সক্ষম হবে। এজন্য মানসম্মত শিক্ষা, সৎ নেতৃত্ব এবং প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশের কৌশলগত স্বার্থ রক্ষায় যথাযথ পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করতে হবে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির বহুমুখীকরণের জন্য ভারত, চীন, এবং অন্যান্য শক্তিশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের পুনর্বিন্যাস জরুরি। বাংলাদেশকে চীনের সঙ্গে তার সম্পর্ক নতুন করে গঠন করতে হবে, কারণ চীন বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) মাধ্যমে অবকাঠামো প্রকল্পে অর্থায়ন এবং বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধির চেষ্টা করছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ নতুন বাজার সৃষ্টি করতে এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে আরো শক্তিশালী অবস্থান নিতে পারবে।
এছাড়া, দেশের রাজনৈতিক বিভক্তি, নির্বাচনকালীন অনিশ্চয়তা এবং শাসন সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার মধ্যে বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি কূটনৈতিক অবস্থান এবং নিরাপত্তা বজায় রাখা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে