পূর্ববর্তী নবী-রাসুলদের রোজার ধরন:
রমজান হিজরি বর্ষের নবম মাস এবং এটি সকল মাসের শ্রেষ্ঠ মাস হিসেবে পরিচিত। ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান হলো রোজা, যা শুধু নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপরই ফরজ হয়নি, বরং পূর্ববর্তী নবীদের সময় থেকেই রোজা পালিত হয়ে আসছে। কোরআনে বলা হয়েছে, “হে মুমিনরা, তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমনটি তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতের ওপর ফরজ করা হয়েছিল।” (সুরা: বাকারাহ, আয়াত: ১৮৩)
পূর্ববর্তী নবীদের সময় রোজার বিধান ছিল এক, তবে তার ধরন ছিল বিভিন্ন। নিচে তাদের রোজার ধরন উল্লেখ করা হলো:
আদম (আ.)-এর রোজা: আদম (আ.) ছিলেন প্রথম মানব ও নবী। আল্লাহ তাকে নিষিদ্ধ গাছের ফল খেতে নিষেধ করেছিলেন, কিন্তু তিনি তা খেয়ে ফেলেন। এরপর আল্লাহ তাকে ১৩, ১৪, ১৫ তারিখে রোজা রাখার নির্দেশ দেন, যার মাধ্যমে তার দেহের রং ফিরে আসে। এ রোজাকে বলা হয় ‘আইয়ামে বিজ’।
নুহ (আ.)-এর রোজা: নুহ (আ.) ছিলেন প্রথম রাসুল। তিনি ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিন ছাড়া সারা বছরই রোজা রাখতেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১৭১৪)
ইবরাহিম (আ.)-এর রোজা: ইবরাহিম (আ.) প্রতি মাসে তিনটি রোজা রাখতেন, যা আদম (আ.)-এর অনুসরণ। (সুনানে ইবনে মাজাহ)
দাউদ (আ.)-এর রোজা: দাউদ (আ.) এক দিন রোজা রাখতেন এবং পরের দিন রোজা রাখতেন না। নবীজী (সা.) তাঁর রোজাকে সবচেয়ে প্রিয় বলে উল্লেখ করেছেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩৪২০)
সুলাইমান (আ.)-এর রোজা: সুলাইমান (আ.) প্রতি মাসে ৯টি রোজা রাখতেন, যার মধ্যে প্রথম, মাঝের এবং শেষ দশক থেকে ৩টি করে রোজা রাখতেন। (কানজুল উম্মাল, হাদিস: ২৪৬২৪)
ঈসা (আ.)-এর রোজা: ঈসা (আ.) বিভিন্ন খাবার থেকে বিরত থাকতেন, বিশেষ করে মাছ ব্যতীত পাখি ও গোশত থেকে। (তাফসিরে তাবারি: ৩/৪১১)
এই রোজার বিধান ও ধরন পূর্ববর্তী নবীদের জীবনযাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক এবং আমাদের জন্য একটি আদর্শিক পথনির্দেশনা।