বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিকভাবে তিনটি প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত, ফলে এটি ভূমিকম্পের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। সম্প্রতি, দুই সপ্তাহের মধ্যে একাধিক ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে, যা বড় ভূমিকম্পের আগমন সংকেত হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এখানে ইন্ডিয়া এবং বার্মা প্লেট একে অপরকে ধাবিত করছে, যা ভূমিকম্পের শক্তি সঞ্চয় করছে এবং এই অঞ্চলে ৮.২ থেকে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার সতর্ক করেছেন যে, এ ধরনের একটি বড় ভূমিকম্পে ঢাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, এবং এক্ষেত্রে দুই লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করতে পারে। ভবিষ্যতে খাদ্যাভাব ও অগ্নিকাণ্ডসহ নানা কারণে আরও মানুষের মৃত্যু হতে পারে।
এছাড়া, ১৭৬২ এবং ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পগুলির ইতিহাসও বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা বৃদ্ধির প্রমাণ দেয়। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ৪১টি ভূমিকম্প হয়েছে।
সরকারি উদ্যোগে, ২০০৮ সালে হাইকোর্টের নির্দেশে ভূমিকম্প প্রস্তুতির জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়, যা এখন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অধীনে বেশ কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে, যার মাধ্যমে ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্সের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভূমিকম্পের আগে সচেতনতা এবং প্রস্তুতির বিষয়ে আরও কার্যকর পরিকল্পনা প্রয়োজন।
ভূমিকম্প মোকাবেলায় ব্যক্তি, পরিবার ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে শিক্ষা ও প্রস্তুতি গ্রহণের গুরুত্ব তুলে ধরে ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেছেন, “এ জন্য সরকারের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা এবং নিয়মিত মহড়ার ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন।”