জাতিসংঘ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে তীব্র অর্থনৈতিক সংকট এবং সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করছে। তারা বাংলাদেশকে সহায়তার জন্য আহ্বান জানিয়ে বলছে, যদি যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে শুধু রোহিঙ্গা শরণার্থী নয়, অন্যান্য জনগণও সীমান্ত পাড়ি দিতে পারে। যদিও বাংলাদেশ এ প্রস্তাবকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছে এবং বিভিন্ন কারণে এটি গ্রহণ করতে আপত্তি জানাচ্ছে।
জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী, রাখাইন রাজ্যের অর্থনৈতিক অবস্থা ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। সীমান্ত বন্ধ থাকার কারণে পণ্য প্রবাহ, আয়ের উৎস, খাদ্য উৎপাদন ও জরুরি সেবা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া, মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি খাদ্য সংকটও তীব্র হয়েছে। জাতিসংঘের আশঙ্কা, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সেখানে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে, যা আরও বৃহত্তর মানবিক বিপর্যয়ের জন্ম দিতে পারে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, শুধু বাংলাদেশকে সহযোগিতার জন্য আহ্বান জানানো একটি অসামঞ্জস্যপূর্ণ উদ্যোগ। তারা বলছেন, বাংলাদেশের নিজস্ব বিপর্যয়ের মধ্যে থাকা ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার পরও, আন্তর্জাতিক চাপ বাংলাদেশের ওপর বাড়ানো হবে। তারা মনে করছেন, এই ধরনের পদক্ষেপ বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলতে পারে, কারণ সেখানে আঞ্চলিক সহযোগিতার অভাব রয়েছে এবং নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
জাতিসংঘ ইতোমধ্যে রাখাইনে সহায়তা পাঠাতে চেষ্টা করেছে, তবে বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে দ্বিতীয় চালান পাঠানোর অনুমতি দেয়নি। মিয়ানমারের একাধিক মানবিক সংকটের মধ্যে, জাতিসংঘ এই সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশকে কেন্দ্রে রেখে কাজ করতে চায়। তবে, বাংলাদেশের অবস্থান সুরক্ষা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রাধান্য দিচ্ছে, এবং এতে কোনো ধরনের ঝুঁকি সৃষ্টি হলে, তা গ্রহণযোগ্য হবে না বলে তারা জানাচ্ছে।
এদিকে, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আসন্ন সফরে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশের অবদান নিয়ে আলোচনা করবেন। তবে বাংলাদেশের অবস্থান নিশ্চিত যে, তাদের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব অবশ্যই সুরক্ষিত থাকতে হবে।