Saturday, April 19, 2025
spot_imgspot_img
Homeজাতীয়নসরুল হামিদের সুপারিশে বরাদ্দ কোটি টাকার পর স্কুলের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

নসরুল হামিদের সুপারিশে বরাদ্দ কোটি টাকার পর স্কুলের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

ঢাকা জেলা পরিষদ ২০২২ সালের ২২ জুন কেরানীগঞ্জ উপজেলার শুভাঢ্যা ইউনিয়নে স্কুল নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প অনুমোদন করে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় কৈবর্তপাড়া এলাকায় ‘কৈবর্তপাড়া স্কুল’ নির্মাণের জন্য ১ কোটি ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রথমে ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয় এবং পরে অবশিষ্ট কাজের জন্য আরও ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়। তবে, যখন ঠিকাদার অর্থ ছাড়ের চেক নিতে যান, তখন স্থানীয় একজন কর্মকর্তা সন্দেহ প্রকাশ করেন। পরে তদন্তে জানা যায়, ওই স্থানে কোনো স্কুল নির্মিত হয়নি।

এটি একটি অদ্ভুত দুর্নীতির ঘটনা, যেখানে নসরুল হামিদের সুপারিশে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। তিনি কেরানীগঞ্জ থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন। তদন্তে জানা যায়, কৈবর্তপাড়া এলাকায় একটি স্কুল নির্মাণের জন্য বরাদ্দ করা টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনায় প্রশাসনিক কর্মকর্তারা প্রকল্পের স্থান পরিদর্শন না করেই কাজ শুরু করায় এবং প্রকল্পের কোনও বাস্তব ভিত্তি ছিল না।

জেলা পরিষদের সাবেক প্রকৌশলী এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা প্রকল্পটি অনুমোদন এবং কাজ শুরু করলেও প্রকৃত অর্থে কোনো স্কুল সেখানে নির্মিত হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কয়েক বছর আগে একটি কেজি স্কুল নির্মাণের চেষ্টা করা হয়েছিল, তবে তা পরে বন্ধ হয়ে যায়। ২০০২ সালে সেখানে একটি টিনশেড ঘর নির্মিত হলেও তা পরে ভেঙে দেওয়া হয়। এরপর, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ‘কৈবর্তপাড়া স্কুল’ নির্মাণের নামে টাকা বরাদ্দ হয়, কিন্তু কাজের অগ্রগতি নেই।

প্রকল্পের সঠিক বাস্তবায়ন না হওয়া সত্ত্বেও অর্থ ছাড়ের জন্য জেলা পরিষদ থেকে চেক নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এই ঘটনায় তদন্ত শেষে কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, কৈবর্তপাড়া এলাকায় কোনো সরকারি স্কুল নেই এবং প্রকল্পটি সরকারের অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, প্রকল্প পরিদর্শন না করে কাজ শুরু করা হয়েছিল এবং এর ফলে সরকারি অর্থের অপব্যবহার হয়েছে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এটি একটি বহুমাত্রিক দুর্নীতির ঘটনা। মন্ত্রীদের এ ধরনের সুপারিশ করার এখতিয়ার নেই এবং এটি এক ধরনের ক্ষমতার অপব্যবহার। যে কর্মকর্তা এই দুর্নীতি চিহ্নিত করেছেন, তিনি প্রশংসনীয় কাজ করেছেন। প্রকল্পটি একটি দুর্নীতির সিন্ডিকেটের অংশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যা সরকারের টাকাকে ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করেছে।

এই ঘটনার পর, ঢাকা জেলা পরিষদ প্রকল্পের সাথে যুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে এবং তাদের দায়ী করে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments