ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে নির্মিত ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি’ হঠাৎ আগুনে পুড়ে গেছে। শনিবার (১২ এপ্রিল) ভোর ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. সাইফুদ্দিন আহমেদ।
সহকারী প্রক্টর মো. ইসরাফিল জানান, ‘ফ্যাসিবাদের মুখাবয়বকে’ লক্ষ্য করেই আগুন লাগানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে পুরো কাঠামোটি আগুনে ভস্মীভূত হয়। পাশাপাশি এর পাশে স্থাপিত ‘শান্তির পায়রা’ অবয়বটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
তিনি আরও বলেন, “আগুন লাগার সময়টি ফজরের নামাজের আশপাশে। খবর পাওয়ার পরপরই আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই, কিন্তু ফায়ার সার্ভিস আসার আগেই সব পুড়ে যায়। ঘটনাটি যে উদ্দেশ্যমূলক ছিল, সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে এখনো অপরাধীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি। তদন্ত চলছে।”
প্রক্টর জানান, নিরাপত্তারক্ষীরা প্রথম আগুন লক্ষ্য করেন এবং তা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। তবে কাঠামোগুলো সম্পূর্ণরূপে পুড়ে যায়। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনকে জানানো হয় এবং ঘটনাস্থলে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।
তদন্তের বিষয়ে তিনি বলেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গত কয়েকদিন ধরেই সংশ্লিষ্ট মোটিফটি নিয়ে শঙ্কার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল। আমরা সেটি আমলে নিয়ে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিলাম। তবে নামাজের সময়টাতে ক্যাম্পাসে কিছুটা ফাঁক ছিল, সম্ভবত সেই সুযোগেই আগুন লাগানো হয়েছে।”
চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. আজহারুল ইসলাম শেখ জানান, ফ্যাসিস্ট প্রতিকৃতি ও শান্তির পায়রা—দুইটি মোটিফই পুড়ে গেছে। তিনি বলেন, “ঘটনার পর সকাল ১০টায় জরুরি বৈঠকে বসা হয়েছে। পরবর্তী পদক্ষেপ ও প্রতিকৃতিগুলোর পুনর্নির্মাণ বিষয়ে সে সভাতেই সিদ্ধান্ত হবে।”
ঘটনাস্থলে থাকা শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হলেও সরাসরি কিছু বলছেন না। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, নিরাপত্তা ছিল কড়াকড়িভাবে, কিন্তু তবুও এমন ঘটনা ঘটে যাওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি নিয়েও।
প্রক্টর বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ছয়টি সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দোষীদের শনাক্তে আমরা কাজ করছি। কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে এখনই সন্দেহ করছি না, তবে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”